চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে চলছে ১৪৪ ধারা, সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে। ক্যাম্পাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা বাহিনীর পাশাপাশি মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রোববারই চবি প্রশাসন সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করেছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংঘর্ষে আহত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. কামাল উদ্দীনকে এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে । এ ছাড়া এ কমিটিতে চবি’র সিন্ডিকেট সদস্য, সাবেক ভিপি ও স্থানীয় বিএনপি নেতা এস এম ফজলুল হকসহ অন্যান্য ছাত্র প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
চবি’র প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে রোববার রাতে প্রায় চার ঘণ্টার বৈঠক শেষে উপ-উপচার্য (শিক্ষা) প্রফেসর শামীম উদ্দীন খান এ বিষয়টি জানান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন স্টেক হোল্ডার নিষ্ক্রিয় থাকায় ছাত্ররা এবং এলাকাবাসী উত্তেজিত হওয়ার কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের সহায়তায় সন্ধ্যার মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।’
সংঘর্ষ এলাকায় থাকা শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে নিজেদের মেস এবং কটেজ ছেড়ে ক্যাম্পাসে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের নিজ জায়গায় ফেরার বিষয়ে শামীম উদ্দীন খান বলেন, ‘আমাদের যেসব শিক্ষার্থী জোবরা গ্রামে বসবাস করছিল তাদেরকে নিজেদের বাসায় নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য ও সাবেক ভিপি এস এম ফজলুল হকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের জন্য হলগুলো উম্মুক্ত রাখা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার ভার চবি প্রশাসন বহন করবে বলেও জানান তিনি।

চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টারের সিনিয়র মেডিকেল অফিসার ড. ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, ‘আনুমানিক দেড় হাজার শিক্ষার্থী আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এর মধ্যে পাঁচশ জনকে আমরা সিএমসি তে পাঠিয়েছি। ১০ জনের মত গুরুতর আহত হয়েছেন। দুই জন আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন।’
প্রশাসনিক ভবনের ওই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, শনিবার চবির এক নারী শিক্ষার্থীকে বাসার দারোয়ান মারধরের ঘটনায় দুই নম্বর গেট এলাকায় সংঘর্ষ শুরু হয়। সময়ের সাথে সাথে সংঘর্ষ তীব্র আকার ধারণ করে এবং আহত শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। রাতভর সংঘর্ষে অন্তত ৪০ শিক্ষার্থী আহত হন। পরদিন এর জেরে আবারো সংঘর্ষে আহত হন দেড় হাজারেরও বেশি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসন চবি ও এর আশেপাশের এলাকায় সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে। স্থগিত করা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পরীক্ষা।