১৯৭১ এর মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাজাপ্রাপ্তির আগে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা গোলাম আযম, মতিউর রহমান নিজামী ও দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে বহুদেশ আশ্রয় দিতে চেয়েছিল, এমন তথ্য জানিয়েছেন দলের আমির শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ‘কিন্তু তারা “আল্লাহর সৈনিক” হিসেবে এদেশেই মর্যাদার সঙ্গে ছিলেন।’
শুক্রবার বিকালে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে দলটির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
২০১৩ সালের ১৫ জুলাই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল, সাবেক জামায়াত আমির গোলাম আযমকে ৯০ বছরের কারাদণ্ড দেয়। তার বিরুদ্ধে ৫ ধরনের ৬১টি অভিযোগ আনা হয়। যার সবগুলোই প্রমাণিত হয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। এ মামলায় কারাভোগ করার সময় বার্ধক্য জনিত কারণে ২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর মারা যান তিনি।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশে মতিউর রহমান নিজামী ২০১৬ সালের ১১ মে ফাঁসিতে মৃত্যুবরণ করেন। আর মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডিত ও জামায়াতের নেতা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ২০২৩ সালের ১৪ অগাস্ট কারাভোগ করার সময় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
জামায়াত আমির শফিকুর রহমান আরো বলেন, ‘বিগত ৫৪ বছরে জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশের একজন নাগরিকের প্রতিও অবিচার করেনি, জুলুম করেনি। জামায়াতের কোনো নেতাকর্মী চাঁদাবাজি কিংবা সন্ত্রাসী করেনি, করবেও না। জামায়াত দল নিয়ন্ত্রণ করেছে, দেশও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। যারা দলই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না—তারা দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সার্বিক পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।’
‘ইসলামকে পৃথিবীর একমাত্র অসাম্প্রদায়িক ধর্ম’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, ধর্ষক, খুনি, লুটেরাদের ভয়ের কারণ আছে—এজন্য তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘যারা ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন করে, তাদের মা-বোন যদি প্রয়োজনে বাজারে যেতে পারে, হাসপাতালে যেতে পারে, প্রয়োজনীয় মৌলিক সব কাজ করতে পারে—তাহলে কেন ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে নারীদের চলাফেরায় বাঁধা সৃষ্টি হবে?’
শফিকুর রহমান বলেন, ‘সকল ধর্মের নারী-পুরুষ সকলেই রাষ্ট্রের কাছে সমান। রাষ্ট্র ধর্মের কিংবা লিঙ্গের বৈষম্য করতে পারে না।’