গাজীপুরে তুহিন হত্যার বিচার চেয়ে সাংবাদিকদের বিক্ষোভ

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
Highlights
  • পুলিশ জানিয়েছে, পৌরসভার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রকাশ্যে এক ব্যক্তির ওপর হামলার ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩২) কুপিয়ে হত্যা করে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী চক্র।

গাজীপুরে সন্ত্রাসী হামলায় হত্যাকাণ্ডের শিকার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনের (৩২) ময়না তদন্ত শেষে জুমার নামাজের পর চান্দনা চৌরাস্তার ঈদগাহ মাঠে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে নিহতের বড় ভাই সেলিম মিয়া মরদেহ গ্রহণ করে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় পারিবারিক গোরস্থানে দাফনের জন্য নিয়ে যান।

এদিকে, তুহিন হত্যার প্রকৃত আসামিদের গ্রেপ্তার ও সন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অভিযানের দাবিতে দাবিতে জেলার সাংবাদিকরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন।  শুক্রবার দুপুরে স্থানীয় প্রেস ক্লাবের সামনে জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন শাখার উদ্যোগে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।

সাংবাদিক হত্যায় ৫ জন আটক, থানায় মামলা

বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশ্যে সাংবাদিক তুহিনকে  কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। জেলার মেট্রোপলিটন পুলিশ শুক্রবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিসি (ক্রাইম) রবিউল হাসান বলেন, ‘পাঁচজনকে আটক করে আনা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজের সাথে মিলিয়ে তাদের সনাক্তকরণের কাজ চলছে।’

তিনি রবিউল বলেন, ‘আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছি যেন কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি এ মামলায় জড়িয়ে না যায়।’

তিনি জানান, পুলিশের একাধিক টিম আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে। পাশাপাশি অব্যাহত রয়েছে পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার গোয়েন্দা বিভাগের তদন্ত।

পুলিশ জানিয়েছে, বাসন থানায় নিহতের বড় ভাই সেলিম মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন।

সেলিম মিয়া আহাজারি করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমারা ভাই সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করতে গিয়ে নিজেই সন্ত্রাসের শিকার হলেন। আর কোনো সাংবাদিককে যেন এমন নির্মম হত্যার শিকার হতে না হয়।

গাজীপুরে নিহত সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন। ফাইল ফটো

ভিডিও দেখে ‘খুনিদের’ সন্ধানে পুলিশ

পুলিশ জানিয়েছে, পৌরসভার চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় প্রকাশ্যে এক ব্যক্তির ওপর হামলার ভিডিও ধারণ করায় সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে (৩২) কুপিয়ে হত্যা করে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ছিনতাইকারী চক্র। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে মসজিদ মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। তুহিন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে গাজীপুরে থেকে কাজ করতেন। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে চান্দনায় ভাড়া বাসায় থাকতেন এবং সাংবাদিকতার পাশাপাশি একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করতেন।

তুহিনের সহকর্মী শামীম হোসেন বলেন, ‘তুহিন ভিডিও করছিলেন দেখে দুর্বৃত্তরা ক্ষিপ্ত হয়। ওরা ভিডিও মুছতে বললে তিনি রাজি হননি। তারপরই ওদের হামলায় মারা যান তিনি।’

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বাদশা মিয়া নামে এক ব্যক্তি ও এক নারীর মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। বাদশা ওই নারীকে আঘাত করলে ধারালো অস্ত্র হাতে কয়েকজন দুর্বৃত্ত নারীর পক্ষ নিয়ে তাকে আক্রমণ করে। বাদশা দৌড়ে পালিয়ে গেলে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে তুহিন মোবাইলে পুরো দৃশ্য ধারণ করছিলেন।

পুলিশ বলছে, এতে সন্ত্রাসীরা ক্ষিপ্ত হয়ে তারা তুহিনকে ধাওয়া করে। তিনি প্রাণ বাঁচাতে কাছের একটি চায়ের দোকানে ঢুকলে সন্ত্রাসীরা সেখানে গিয়ে বুক, গলা, কাঁধ ও পিঠে এলোপাতাড়ি কোপায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

আহত বাদশা মিয়া বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। ভিডিওতে দেখা নারী মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে ছিনতাই করার একটি চক্রের সদস্য হতে পারেন। বাসন, ভোগরা ও চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় এ চক্র দীর্ঘদিন সক্রিয়।

পুলিশ জানায়, ওই ভিডিও ক্লিপ দেখে তুহিন হত্যায় জড়িতদের চিহ্নিত করার পাশাপাশি পুরো সন্ত্রাসী চক্রটিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

 

 

 

 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *