ইসরায়েলি বাহিনী অন্তত ২৫ জনকে হত্যা করেছে, যার মধ্যে ১২ জন নিহত হয়েছেন একটি স্কুলে চালানো হামলায়। স্কুলটি যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার গাজার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।
হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রায় ২২ মাসে গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে এবং দুই মিলিয়নের বেশি জনসংখ্যার প্রায় সবাই বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। অনেকে স্কুলভবনে আশ্রয় নিলেও এসব ভবন বারবার ইসরায়েলি হামলার শিকার হচ্ছে। ইসরাইল সেনাবাহিনী দাবি করে, এসব স্থানে হামাস যোদ্ধারা লুকিয়ে থাকেন।
গাজা সিটি থেকে সংবাদ সংস্থা এএফপি, গাজা শহরে সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-মুগাইয়ির বলেন, ‘একটি স্কুল-আশ্রয়কেন্দ্রে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অধিকাংশই নারী ও শিশুসহ ১২ জন নিহত ও আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।’
অবশ্য ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এই হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
মানবিক সহায়তা পৌঁছানো এবং ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হামলায় অপহৃতদের মুক্তির লক্ষ্যে যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বেড়েছে। চলতি সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ঘোষণা করেন এবং বলেন, এতে ইসরায়েল সম্মত হয়েছে।
তবে, ইসরায়েলি নেতারা হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্য থেকে সরে আসেননি। যদিও মঙ্গলবার হামাস জানায়, তারা মধ্যস্থতাকারীদের নতুন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করছে।
বৃহস্পতিবার ক্ষতিগ্রস্ত স্কুলে এএফপির ধারণকৃত ফুটেজে দেখা যায়, ছোট ছোট শিশু পোড়া ধ্বংসাবশেষের ভেতর ঘুরে বেড়াচ্ছে। মৃতদেহের পাশ ঘেঁষে পুড়ে যাওয়া আসবাবপত্রের মধ্যে ধ্বংসস্তূপ সরাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা।
আল-শিফা হাসপাতালে নিহতদের শোক জানাতে আসা উম্মু ইয়াসিন আবু আওদা বলেন, ‘এটা কোনো জীবন না। আমরা যথেষ্ট সহ্য করেছি।’
’দুই বছর ধরে কেবল এক টুকরো রুটির জন্য লড়াই করছি। ইসরায়েল চাইলে আমাদের ওপর পারমাণবিক বোমা ফেলুক, অন্তত একবারে শেষ হোক, না হয় মানবতার বিবেক জাগুক,’যোগ করেন তিনি।
সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা মুগাইয়ির আরও বলেন, ‘গাজার কেন্দ্রে সহায়তা বিতরণস্থলের কাছে মানবিক সহায়তা প্রত্যাশীদের ওপর ইসরায়েলি গুলিতে ছয়জন নিহত হয়েছেন এবং অনেক আহত হয়েছেন।’
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় গোলাবর্ষণে তিনজন, জাবালিয়ায় এক ব্যক্তি এবং দক্ষিণাঞ্চলের আল-মাওয়াসি উপকূলীয় এলাকায় আশ্রয়শিবিরে হামলায় তিনজন নিহত হন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার২১৯ জন নিহত হন, ইসরায়েলের সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে যাদের বেশিরভাগই ছিলেন বেসামরিক নাগরিক।