গাজায় যুদ্বাহত শিশুদের জন্য ভিসা বন্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র; ফিলিস্তিনের ‘চিলড্রেন’স রিলিফ ফান্ড’ (পিসিআরএফ) এর নিন্দা জানিয়ে শিশুদের প্রাণ রক্ষায় আবারও ভিসা চালু করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
বিবিসি ও আল জাজিরার খবরে বলা হয়, পিসিআরএফ-এর গ্লোবাল পেশেন্ট অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক তারেক হাইলাত বলেন, ‘ইসরায়েলি হামলায় আহত শিশুদের জন্য চিকিৎসা ভিসা বন্ধ করা “মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার” পরিপন্থী।’
এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য সব ধরণের ভিসা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
সম্প্রতি আহত ফিলিস্তিনিদের জন্য অল্পসংখ্যক ‘অস্থায়ী চিকিৎসা ও মানবিক ভিসা’ চালু করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এসব ভিসায় আবেদনকারীদের তথ্য ও নথিপত্র যাচাই করতে ‘সময় প্রয়োজন’। এ কারণে আপাতত ফিলিস্তিনিদের আর কোনো ভিসা দেওয়া হবে না।
এর নিন্দা জানিয়ে পিসিআরএফ বিবৃতিতে বলছে, ২০২৪ সালে ‘বিদেশে চিকিৎসা কর্মসূচির’ অংশ হিসেবে গাজা থেকে ১৬৯ জন শিশুকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের সুচিকিৎসার জন্য মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ওয়াশিংটনের এই সিদ্ধান্ত আমাদের জন্য বিপর্যয়কর এবং অপূরণীয় ক্ষতি করতে পারে। গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আহত ও গুরুতর অসুস্থ শিশুদের যুক্তরাষ্ট্রে এনে জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা দেওয়ার আমাদের চেষ্টা ওই মার্কিন সিদ্ধান্তে মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।’
ওই সংস্থার কর্মকর্তা তারেক হাইলাত বলেন, ‘গাজায় এই শিশুরা চিকিৎসাহীন অবস্থায় রয়েছে; তাদের বাঁচিয়ে রাখতে অন্য দেশে নিয়ে যেতে হয়।’
‘যুদ্ধের শুরু থেকেই ইসরায়েলের অনুমোদন ছাড়া আমরা আহত শিশুদের অন্য দেশে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারতাম না। তবে যুক্তরাষ্ট্র ভিসা বন্ধ করায়, ইসরায়েলি সেনাদের অনুমোদন পেলেও এই শিশুরা এখন চিকিৎসার অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে’, বলেন তিনি।
এদিকে গাজা পূর্ণ দখলের উদ্দেশ্যে বিমান হামলার পাশাপাশি কঠোর স্থল অভিযান অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। রোববার রাতে গাজা সিটির আল-আহলি হাসপাতালে বোমা হামলায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি অবরোধে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষে আরও ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে সম্প্রতি অপুষ্টি ও খাবারের অভাবে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৫১ জনে, যাদের মধ্যে ১০৮ জনই শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজা যুদ্ধে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৬১ হাজার ৮২৭ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি।