খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি সীমান্ত পথে একাধিক পয়েন্ট দিয়ে ৮০ ভারতীয় নাগরিককে এপারে পুশ ইন দেশটির সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ।
স্থানীয় প্রশাসনের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতী ইউনিয়নের দক্ষিণ শান্তিপুর এলাকায় গিয়ে জানা যায়, সেখানের দক্ষিণ শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ২৭ জন, তাইন্দং-এর আচালং সীমান্ত দিয়ে ২৩ জন এবং পানছড়ি উপজেলার রুপসেন পাড়া সীমান্ত দিয়ে ৩০ জনকে পুশ ইন করেছে ভারত। তাদের অধিকাংশ শিশু ও নারী।
খাগড়াছড়ি জেলার ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা জানান, রাত আটটা পর্যন্ত খাগড়াছড়ি জেলায় সর্বমোট ৮০ জনের মতো অনুপ্রবেশের তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
তিনি জানান, অনুপ্রবেশের বিষয়ে সকল ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বিজিবি। তবে বর্তমানে অনুপ্রবেশকারীদের মানবিক সহযোগিতা হিসেবে খাবারের ব্যবস্থা করছে জেলা প্রশাসন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অনুপ্রবেশকারীরা নিজেরা ভারতের নাগরিক বলে জানান। তারা সবাই চরম হতবিহ্বল ও আতঙ্কগ্রস্ত। এক কাপড়ে তাদের এপারে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী– বিজিবি সতর্ক অবস্থানে থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে।
দক্ষিণ শান্তিপুর এলাকার বাসিন্দা মো. আবুল হাসেম জানান, বাংলাদেশে প্রবেশ করা ভারতীয়রা সকলেই খুব বেশি আতঙ্কগ্রস্ত এবং ক্ষুধার্ত ছিল। তিনিসহ আরও কয়েকজন মিলে পাশের দোকান থেকে মুড়ি, চানাচুর কিনে তাদের খাবারের জন্য দিয়েছেন। তাদের বিষয়ে পাশের বিজিবি ক্যাম্পে খবর দিয়েছেন।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মনজুর আলমসহ বিজিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাইন্দং এর আচালং এবং দক্ষিণ শান্তিপুর এলাকায় অনুপ্রবেশকারীদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলেছেন। ‘মানবিক দিক বিবেচনায়’ আপাতত তাদের স্থানীয় দুই জনের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিজিবির পক্ষ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
এছাড়া বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সীমান্তের ওপারে বিভিন্ন স্থানে এখনো অনেক লোকজন জড়ো করে রেখেছে বিএসএফ। যে কোনো সময় তাদের বাংলাদেশে পুশ ইন করা হতে পারে।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে এই ধরনের 'পুশ-ইন' কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ভারতের বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং বিভিন্ন স্তরে পতাকা বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। যদি তারা ভারতীয় নাগরিক হিসেবে প্রমাণিত হয়, তবে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে। এ বিষয়ে ভারতের যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।
বিজিবি সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে, নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে থেকে সীমান্তে সজাগ দৃষ্টি রাখছে।