এনামুল হক বিজয়ের উইকেট হারিয়ে কলম্বো টেস্ট শুরু, মুমিনুল হকও বড় করতে পারেননি ইনিংস। লাঞ্চ ব্রেকের পর দুই ওভারে নাজমুল হোসেন শান্ত আর সাদমান ইসলামের উইকেট হারিয়ে টালমাটাল বাংলাদেশ। কলম্বোর ভারী বৃষ্টিতে প্রায় ঘণ্টা তিনেক খেলা বন্ধ থাকার পর মুশফিকুর রহিম-লিটন দাসের মাঝারি একটা প্রতিরোধ। দুজনই জীবন পেয়েছেন একবার করে, তবুও দলকে রেখে যেতে পারেননি ভালো অবস্থানে। বেশিরভাগ ব্যাটারই ফিরেছেন উইকেট সেট হয়ে। কলম্বো টেস্টে আলোকস্বল্পতায় ১০ ওভার আগে প্রথম দিনের খেলা শেষ হওয়ার আগে ৮ উইকেটে ২২০ রান তুলেছে বাংলাদেশ।
দলীয় ৭৬ রানে থারিন্দু রথনায়েকের বলে সাদমান আউট হওয়ার পর চতুর্থ উইকেটে জুটি গড়েন মুশফিক আর লিটন। প্রতিপক্ষের স্পিনারদের ভালোই সামলাচ্ছিলেন দুজন। উইকেটের সাথে মানিয়ে নেয়ার পর বেশ কিছু শটও খেলেছেন লিটন। সেটাই যেন কাল হলো তার। ইনিংসের ৪৭তম ওভারে প্রবাথ জয়সূরিয়াকে দারুণ একটা শটে চার মেরেছিলেন এই ডানহাতি, পঞ্চম বলে আবারও স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলেন। জয়সূরিয়া নিজের বলে সেই ক্যাচ হাতে রাখতে না পারায় জীবন পান লিটন।
অবশ্য সেই সুযোগও কাজে লাগাতে পারেননি বাংলাদেশের এই উইকেটকিপার-ব্যাটার। এক ওভার পরেই টেস্ট ক্রিকেটে প্রথমবার বল হাতে নেয়া অভিষিক্ত সোনাল দিনুশাকে উইকেট দিয়ে ফেরেন তিনি। অফ স্টাম্প লাইনের বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে ক্যাচ দেন উইকেটকিপার কুশাল মেন্ডিসের হাতে। ৫৬ বলে ২ চার ও ১ ছয়ে ৩৪ রান আসেন লিটনের ব্যাটে।
লিটনের মতো একই ভুল করেছেন মুশফিকুর রহিম। ব্যক্তিগত ৮ রানে ডিপ মিড উইকেটে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তুললেও, সেটা মিস করেন লাহিরু উদারা। মজার ব্যাপার, দেখেশুনে ব্যাট করতে থাকা মুশফিক আচমকাই অভিষিক্ত দিনুশাকে টেনে শট খেলে ডিপ মিড উইকেটেই ক্যাচ দিয়েছেন, সেই যাত্রায় ধরা পড়েছেন বিশ্ব ফার্নান্দোর হাতে। মিড উইকেট, স্কয়ার লেগ অঞ্চল মুশফিকের স্কোরিং জোন, সেটা জেনেই শ্রীলংকা অধিনায়ল ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ফিল্ড সাজিয়েছিলেন ওভাবে। মুশফিকও তাদের পাতা সেই ফাঁদে পা দিয়ে আউট হন ৭৫ বলে ৫ চারে ৩৫ রান করে।
মুশফিকের বিদায়ের পর টেইলএন্ডার নাঈম হাসানের সাথে ৫৬ বলে ৩৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ একটা জুটি গড়েন মিরাজ। বাংলাদেশের স্কোর ২০০ পেরিয়েছে এই জুটির অবদানেই। অবশ্য দলীয় ২০০ ছোঁয়ার আগেই বিদায় নেন প্রথম টেস্ট মিস করা মিরাজ। বাঁহাতি পেসার বিশ্বর দ্বিতীয় শিকার হওয়ার আগে মিরাজের ব্যাট থেকে আসে ৩১ রানের ইনিংস। মিরাজের সাথে বাংলাদেশের ইনিংসকে টেনে নিচ্ছিলেন নাঈমও। একাই খেলেছেন ৫১টা বল। ৭০ মিনিটে দলের স্কোরকার্ডে দলের স্কোরকার্ডে যোগ করেছেন মহামূল্যবান ২৫ রান। তার বিদায়ের পর এবাদত হোসেনকে নিয়ে দিনের খেলা শেষ করেছেন তাইজুল ইসলাম।
এর আগে দিনের শুরুতে ১০ বল খেলেও কোনো রান করতে পারেননি ওপেনার এনামুল হক বিজয়। বোল্ড হয়েছেন আসিথা ফার্নান্দোর দারুণ এক ইনসুইংগারে। উইকেটে সেট হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি মুমিনুল। ৩৯ বলে ২১ রান করে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে স্লিপে ক্যাচ দেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।