ওষুধ শিল্প খাতের সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে উদ্বেগ মির্জা ফখরুলের

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের সম্ভাবনাময় ওষুধ (ফার্মাসিউটিক্যাল) শিল্প খাতের সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও শিল্পবান্ধব নীতির মাধ্যমে শিল্পটি রক্ষা করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বুধবার এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি সরকার বেশ কিছু অস্বচ্ছ ও একপাক্ষিক নীতি ও নির্দেশনা নিয়েছে এবং কিছু ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনার নজির তৈরি করেছে, যা এই সম্ভাবনাময় শিল্পের জন্য বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে।’

মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, জরুরি ওষুধের তালিকা ও সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য সদ্য গঠিত ড্রাগ কন্ট্রোল কমিটির (ডিসিসি) টেকনিক্যাল সাব-কমিটিতে বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির (বিএপিআই) কোনো প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিশ্বাস করে নীতি প্রণয়ন, নিয়ন্ত্রণ ও ফার্মাসিউটিক্যাল খাত উন্নয়নে স্বচ্ছতা, অংশগ্রহণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং পেশাজীবীদের অংশগ্রহণ অপরিহার্য। জাতীয় স্বার্থে সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত হলো বিএপিআই এবং সংশ্লিষ্ট সব অংশীদারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে যৌথ সমাধান খুঁজে বের করা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো কমিটি গঠন, সংশোধন বা বাস্তবায়ন সমর্থন করি না যা শিল্প উদ্যোক্তাদের বাদ দেয়। আসন্ন এলডিসি স্নাতকত্বকে সামনে রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে খাত রক্ষার জন্য। প্রায় দুই বছর ধরে নতুন কোনো ওষুধ নিবন্ধন করা হয়নি এবং দীর্ঘ সময় ধরে ওষুধের মূল্যও সমন্বয় করা হয়নি।’

‘নতুন ওষুধ অনুমোদন না দেওয়ায় বাংলাদেশ ট্রিপস ওয়েভার (ছাড়) সুবিধা হারাতে বসেছে। কারণ, ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হবে। তাই নতুন ওষুধের নিবন্ধন কোনো বিলম্ব ছাড়াই দ্রত অনুমোদন করা উচিত,’যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘ফার্মাসিউটিক্যাল খাত এখন শুধু উৎপাদন শিল্প নয়, এটি দেশের কৌশলগত সম্পদ। এই খাতের সুরক্ষা ও উন্নয়নের জন্য সময়োপযোগী ও দায়িত্বশীল সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি।’

সরকার, বেসরকারি খাত, উদ্যোক্তা, বিশেষজ্ঞ ও গবেষকদের সমন্বয়ে এই শিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল আশা প্রকাশ করেন, উদ্যোক্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে শিল্পবান্ধব সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে সরকার এই খাতের স্থিতিশীলতা ও সুনাম বজায় রাখবে।

বাংলাদেশি ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্প দীর্ঘদিন ধরে অর্থনীতি, জনস্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। শিল্পটি প্রায় সব অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে এবং ধারাবাহিকভাবে রপ্তানি সম্ভাবনা বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করেছে, যোগ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে তৈরি মানসম্মত ওষুধ এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া সহ ১৬০টির বেশি দেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। খাতটি অ্যাকটিভ ফার্মাসিউটিক্যাল ইনগ্রিডিয়েন্ট (এপিআই) উৎপাদনের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করছে।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *