বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হয়েছে।
চিফ প্রসিকিউটরের পক্ষ থেকে ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে সোমবার এই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ অভিযোগটি আমলে নেওয়ার জন্য উপস্থাপন করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, তদন্ত সংস্থা আবু সাঈদ হত্যার যে প্রতিবেদন দিয়েছে, তাতে ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন যাচাই-বাছাই করে তা ট্রাইব্যুনাল-২ এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ হিসেবে দাখিল করা হবে।
এই মামলায় গ্রেফতার চার আসামির মধ্যে পুলিশের সাবেক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন এবং সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে আগামী ১৮ জুন এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী আকাশকে ১৯ জুন জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল-১।
২০২৪ সালে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। সেই সময় ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন আবু সাঈদ (২৫)। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পুলিশের গুলিতে এই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। এর প্রতিবাদে ছাত্র-জনতা আরও সোচ্চার হয়ে ওঠে এবং আন্দোলন নতুন মাত্রা পায়। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা।