নগরভবনের সামনে ফের বিক্ষোভ শুরু করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের সমর্থকরা। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কর্মচারীদের একটি অংশও তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। কোনো ধরনের বিলম্ব না করে ইশরাককে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে তারা এই আন্দোলন করছেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, ৪৮ ঘণ্টার বিরতি শেষে শুরু হয়েছে এই বিক্ষোভ। এতে বিঘ্নিত হচ্ছে নগরভবনের নাগরিক সেবা। ঢাকা শহরের বাসিন্দাদেরও ব্যাপক অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। নগরভবনের মূলফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ভবনের ভেতর দিয়ে ইশরাক সমর্থকরা ক্ষণে ক্ষণে মিছিল নিয়ে যাচ্ছেন এবং স্লোগান দিচ্ছেন।
ইশরাকের এক সমর্থক বলেন, ‘জনগণের মেয়র ইশরাককে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দেওয়ার আগ পর্যন্ত আমরা এখান থেকে যাব না। দ্রুত সময়ের মধ্যে আমরা তাকে মেয়র হিসেবে দেখতে চাই।’
বিক্ষোভের কারণে ১৪ মে থেকে নগর ভবন থেকে দেওয়া সব নাগরিক সেবা বন্ধ রয়েছে। এমনকি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, মশক নিয়ন্ত্রণ, জন্ম ও মৃত্যু সনদ দেওয়ার কার্যক্রমও স্থগিত রয়েছে।
২০২০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে ইশরাক হোসেনকে পৌনে ২ লাখ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে মেয়র হন আওয়ামী লীগের শেখ ফজলে নূর তাপস।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গেল ২৭ মার্চ ঢাকার নির্বাচনি ট্রাইব্যুনাল সেই ফল বাতিল করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে।
এরপর ২৭ এপ্রিল ইশরাককে ডিএসসিসি মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু তাকে যেন শপথ পড়ানো না হয় সেজন্য গত ১৪ মে হাই কোর্টে রিট আবেদন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মামুনুর রশিদ।
এমন পরিস্থিতিতে মেয়রের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে ১৪ মে থেকে আন্দোলন নামেন ইশরাক সমর্থকরা। তাদের আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসি নগর ভবন কার্যত অচল হয়ে পড়ে। কিন্তু আইনি জটিলতার কথা বলে ইশরাকের শপথের আয়োজন থেকে বিরত থাকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
এরপর এ রিট মামলার ওপর মঙ্গল ও বুধবার কয়েক দফা শুনানির পর বৃহস্পতিবার তা খারিজ করে আদেশ দেয় বিচারপতি আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাই কোর্ট বেঞ্চ।
এরপর ওইদিন বিকালে শপথ পড়ানোর জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন ইশরাক।