রেস্তোরাঁর নামে সিসা বারের ছড়াছড়ি

কামরুজ্জামান খান
2 Min Read

রাজধানীর অভিজাত পাড়ায় রেস্তোরাঁর নামে গড়ে উঠছে অনুমোদনহীন একের পর এক সিসা বার। কফি শপ কিংবা ক্লাবের আড়ালেও চলছে নেশার এই গোপন কারবার। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) ও পুলিশ বলছে, ঢাকায় অন্তত ১৬ থেকে ১৭টি সিসা বারে সন্ধান পাওয়া গেছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঝেমধ্যে এসব সিসা বারে অভিযান চালালেও কিছুতে বন্ধ করা যাচ্ছে না এ অবৈধ কার্যক্রম। তরুণ-তরুণীদের মধ্যে সিসা সেবনের মাত্রা বেড়েছে। ক্রমেই ভয়ংকর মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছেন অনেকে।

বাংলাদেশ বার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেজর (অব.) জাহাঙ্গীর আলম টাইমস অব বাংলাদেশেকে বলেছেন, ‘আরব দেশের আদলে দেশে সিসা বার চালুর আলোচনা থাকলেও অনুমোদন মেলেনি। অথচ আবাসিক ভবনেও গড়ে উঠছে সিসা বার। এর দায় পুলিশ ও ডিএনসিরও রয়েছে।’

গত বৃহস্পতিবার ভোরে বনানীর একটি বহুতল ভবনে ‘৩৬০ ডিগ্রি’ নামে একটি সিসা বারের সিঁড়িতে রাব্বি নামের এক তরুণ খুন হন। এ ঘটনায় সিসা বার নিয়ে নতুন করে ওঠে বিতর্ক।

ডিএনসি জানায়, এই বারটির আগের নাম ছিল ‘অ্যারাবিয়ান কোজি’। কয়েক দফা অভিযানের পর তারা নাম পাল্টে আবার গোপনে সিসার ব্যবসা শুরু করে।

‘৩৬০ ডিগ্রি’ নামে একটি সিসা বারের যুবকের ওপর হামলার দৃশ্য। ছবি: সিসিটিভি ফুটেজ

ডিএনসি ঢাকা মেট্রো উত্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ বলেন, ‘রেস্তোরাাঁর লাইসেন্স নিয়ে চালানো হয় সিসা বার। চতুরতার সঙ্গে ঠিকানা ও নাম বদল করে তারা চালিয়ে যাচ্ছে ব্যবসা।’

রাজধানীর গুলশান, বনানী, উত্তরা, বারিধারা, বসুন্ধরা, বেইলি রোড ও ধানমন্ডির অভিজাত এলাকায় বেশ কিছু রেস্তোরাঁয় চলছে এই কার্যক্রম। নামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অনেকে এর নিয়মিত গ্রাহক। অনেকে সিসার পাশাপাশি জড়িয়ে পড়ছেন অনৈতিক কর্মকাণ্ডেও।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম টাইমস অব বাংলাদেশকে বলেন, ‘সিসাসহ সব মাদকের বিরুদ্ধে পুলিশের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। তথ্য পেলেই অভিযান চালানো হয়।’

ডিএনসি জানায়, সিসার ফ্লেভারে রয়েছে নিকোটিন। ‘লেডি কিলার’, ‘লাভ সিক্সটি সিক্স’, ‘হ্যাভানা লাইট’, ‘অরেঞ্জ মিন্ট’ ও ‘স্ট্রবেরি’- সব ফ্লেভারেই মেলে ০.৫ শতাংশ নিকোটিন।

মাদকবিরোধী সংগঠন ‘মানস’-এর প্রতিষ্ঠাতা ডা. অরুপ রতন চৌধুরী বলেন, ‘সিসা মূলত হারবাল ড্রাগ। এর মাধ্যমে তরুণদের কোকেন, হেরোইন ও ইয়াবার মতো মাদকে টেনে নেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘মাদক নির্মূলে সরকার কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় বিপদ বাড়ছে।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *