মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় এখনও ৫ জনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাদেরকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে ভর্তি রাখা হয়েছে। অন্যদিকে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় আগামীকাল শনিবার বেশ কয়েকজনকে ছাড়পত্র দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘এই ঘটনায় আজ শুক্রবার পরপর দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এখন ৪০ জন ভর্তি রয়েছে। এদের মধ্যে ক্রিটিক্যাল অবস্থা ৫ জনের। তাদেরকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। এদের চাইতে একটু কম গুরুতর অর্থাৎ সিপিআর ক্যাটাগরিতে রয়েছে ১০ জন। ইন্টারমিডিয়েট ক্যাটাগরিতে পোস্ট অপারেটিভ রয়েছে আরও ১০ জন এবং ক্যাবিনে রয়েছে ১৫ জন।’
‘যে কয়জনকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাদের ভিতর থেকে দুই জনের শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তারা নিজে নিজে শ্বাস নিতে পারছে। এই ৪০ জন রোগীর মধ্যে শনিবার ৪-৫ জন রোগীকে আমরা ছুটি দিতে পারব।’
ডা. নাসির আরও বলেন, ‘সিঙ্গাপুর, চীন ও ভারতের চিকিৎসক দল আজ আমাদের সাথে এই সকল রোগীদের বিষয়ে মিটিংয়ে বসেছিলেন। তারা রোগীদেরও দেখেছেন।’
এদিকে আহত-নিহতের সর্বশেষ তালিকা দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি জানান, বর্তমানে ভর্তি সর্বমোট ৫০ জনের মধ্যে বার্ন ইন্সটিটিউটে ৪০ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৮ জন, শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন ও জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে একজন রোগী রয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারিতে ১৫ জন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ১৫ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন, লুবানা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে একজন এবং ইউনাইটেড হাসপাতালে একজনের মৃত্যু হয়।’
২১ জুলাই দুপুর ১টার কিছু পরে বিমান বাহিনীর একটি এফ-৭ বিজিআই প্রশিক্ষণে নিয়োজিত যুদ্ধবিমান উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিধ্বস্ত হয়।
মর্মান্তিক এই ঘটনার পর মঙ্গলবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে অন্তর্বর্তী সরকার।
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সামরিক বিমান দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে বেশিরভাগই শিশু।