বাংলাদেশের নগরে বসবাসরত দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবিকা সহায়তা প্রকল্প (এলএসইউপিসিবি) উদ্বোধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) এবং চায়না ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কোঅপারেশন এজেন্সি (সিডকা)-এর সহযোগিতায় এ প্রকল্প উদ্বোধন করা হয়।
সিডকার নেতৃত্বে গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সাউথ-সাউথ কোঅপারেশন ফান্ড (জিডিএফ) এর অর্থায়নে বাস্তবায়িত এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো ঢাকা উত্তর, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও চাঁদপুরের প্রান্তিক পরিবারের আয়ের সুযোগ বৃদ্ধি, পুষ্টি উন্নয়ন এবং সহনশীলতা জোরদার করা।
এটি চীনের গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ (জিডিআই) ও বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন অগ্রাধিকারের প্রতি যৌথ প্রতিশ্রুতির একটি অংশ ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী মোট কার্বন নিঃসরণের মাত্র দশমিক ৩৫ শতাংশেরও কম অবদান রাখলেও সবচেয়ে জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।’
‘এই প্রকল্প আমাদের নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবিকা শক্তিশালী করা, তাদের মর্যাদা রক্ষা করা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সহনশীলতা গড়ে তোলার একদারিদ্র্যটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ,’ যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশে চীনা দূতাবাসের বাণিজ্য কাউন্সেলর সঙ ইয়াংও উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, ‘চীন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন এবং জনগণের জীবিকা উন্নয়নে বাস্তব পদক্ষেপের মাধ্যমে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। একটি ন্যায়সঙ্গত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বিশ্ব গড়ে তুলতে আমরা ইউএনডিপি সহ আরো অনেকের সঙ্গে কাজ করছি যেখানে দারিদ্র্য শুধুই অতীত হবে।’
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে ইউএনডিপি বাংলাদেশে নগর সহনশীলতা ও জীবিকা উন্নয়নের জন্য কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারকে সহায়তা করে আসছে। সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো। সিডকার সহযোগিতায় এই কর্মসূচি সাউথ-সাউথ করপোরেশন আরও জোরদার করবে এবং ২০৩০ এজেন্ডাকে আরও শক্তিশালী করবে।’
এর আগে, ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি আনোয়ারুল হক প্রকল্পের লক্ষ্যগুলো তুলে ধরেন। পরে ইউএনডিপির প্রকল্প ব্যবস্থাপক যোগেশ প্রাধানাং প্রকল্পের কাঠামো ও কৌশল বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেশনে দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ, পুষ্টি সহায়তা এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক জীবিকা সুযোগের পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়, যা নগর দরিদ্র জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সহায়তা করবে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে হাজারো নগর দরিদ্র পরিবার উপকৃত হবে এবং সবার জন্য সহনশীল নগর গড়ে উঠবে বলে আশা করা যাচ্ছে।