‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ গুজব সংসদে তুলে ধরলেন জয়শঙ্কর

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
Highlights
  • ‘এস জয়শঙ্কর বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে সবসময় জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে—এমন সব ঘটনার ওপর ভারত সরকার পর্যবেক্ষণ করে এবং নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’

এবার তথাকথিত ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’-এর মানচিত্রের গুজব ভারতের জাতীয় সংসদে তুলে ধরলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এরমাধ্যমে ‘গ্রেটার বাংলাদেশ’ নিয়ে দেশটির গণমাধ্যম যে অপপ্রচার চালিয়ে আসছিল, তার উত্তেজনা ছড়াল ভারতের সংসদেও।

বাংলাফ্যাক্ট এক প্রতিবেদনে বলছে, ‘সম্প্রতি জয়শঙ্কর সংসদে দেওয়া ভাষণে বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধান এবং বাংলাদেশের গণমাধ্যমের কথা উল্লেখ করেন। এ বিষয়ে দৈনিক যুগান্তর, ইত্তেফাক, যায়যায়দিন, ইনকিলাব, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, সময় টিভিসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তবে সেসব প্রতিবেদনে ভারতীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত খবরেরই পুণরাবৃত্তি দেখা গেছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংসদে বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধান সংক্রান্ত বক্তব্য উল্লেখ করলেও, মূল ঘটনা সম্পর্কে কোনো স্বতন্ত্র অনুসন্ধান করেননি।’

প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গত ৩১ জুলাই ভারতের রাজ্যসভায় রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য রণদীপ সিং সুরজেওয়ালার এই প্রসঙ্গে করা এক প্রশ্নের জবাবে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এক লিখিত বিবৃতিতে বলেন, “সরকার বিষয়টি নজরে এনেছে যে ঢাকার একটি ইসলামপন্থী সংগঠন সালতানাত-ই-বাংলা, যাদের পেছনে তুরস্কভিত্তিক এনজিও টার্কিশ ইয়ুথ ফেডারেশন আছে, তারা একটি তথাকথিত “গ্রেটার বাংলাদেশের” মানচিত্র প্রকাশ করেছে, যাতে ভারতের কিছু অংশও দেখানো হয়েছে। এই মানচিত্রটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদর্শন করা হয়।’

‘তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকারের ফ্যাক্ট-চেকিং প্ল্যাটফর্ম বাংলাফ্যাক্ট বলেছে, সালতানাত-ই-বাংলা নামে কোনো সংগঠনের অস্তিত্বের প্রমাণ তারা পায়নি। তারা আরও জানিয়েছে, যে মানচিত্রটি দেখানো হয়েছে, তা ছিল ইতিহাসভিত্তিক একটি প্রদর্শনীর অংশ, যেখানে প্রাচীন বাংলার সালতানাত বা সুলতানাত-এর সময়ের মানচিত্র দেখানো হয়েছিল। এই প্রদর্শনীটি ২০২৫ সালের ১৪ এপ্রিল, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজন করা হয়। আয়োজকরা জানিয়েছেন, তাদের কোনো বিদেশি রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পর্ক নেই।’

‘এস জয়শঙ্কর বলেন, ভারত সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে সবসময় জাতীয় স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে—এমন সব ঘটনার ওপর ভারত সরকার পর্যবেক্ষণ করে এবং নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করে।’

বাংলাফ্যাক্ট প্রতিবেদনে জানায়, ‘এ বছর মে মাসের মাঝামাঝি থেকেই ভারতীয় মূলধারার গণমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হয়, তুরস্কভিত্তিক একটি এনজিওর সমর্থনে সালতানাত ই বাংলা নামে একটি সংগঠন বাংলাদেশে “গ্রেটার বাংলাদেশ”-এর মানচিত্র ছড়াচ্ছে। গত ২০ মে বাংলাফ্যাক্ট বিস্তারিত অনুসন্ধান করে দেখায়, সালতানাত-ই-বাংলা নামে কোনো সংগঠনের অস্তিত্ব নেই। তবে গত পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে “ভালো কাজের হালখাতা” নামে এক প্রদর্শনীর আয়োজন করে সেন্টার ফর বেঙ্গল স্টাডিজ (সিবিএস) নামের একটি সংগঠন। সেখানে বাংলা সালতানাতের মানচিত্র প্রদর্শনী করা হয়, এবং ঐতিহাসিক মানচিত্র হিসেবেই তা প্রদর্শনী করা হয়, তথাকথিত “গ্রেটার বাংলাদেশ”-এর মানচিত্র হিসেবে নয়। সিবিএস কোনো এনজিও নয় এবং তুরস্ক ভিত্তিক কোনো সংগঠনের সাথেও সম্পর্কিত নয়।’

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *