গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় ২২ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়েছে। বুধবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং এ তথ্য জানিয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘গোপালগঞ্জে বুধবার রাত ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।’
এদিকে, গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছেন। হাসপাতাল ও পরিবার সূত্র এ কথা জানা গেছে।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন- গোপালগঞ্জ শহরের উদয়ন রোডের বাসিন্দা সন্তোষ সাহার ছেলে দীপ্ত সাহা (২৫), কোটালীপাড়ার রমজান কাজী (১৮), টুঙ্গীপাড়ার সোহেল মোল্লা (৪১) এবং ইমন তালুকদার (২৮)।
বুধবার পৌনে সাতটায় গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, এখন পর্যন্ত চারজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের শরীরে গুলি ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
পরে ক্রীড়া ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘গোপালগঞ্জে কারফিউ জারি করা হয়েছে। জীবন-মৃত্যুর মতো পরিস্থিতি না হলে সাধারণ জনগণ কেউ ঘর থেকে বের হবেন না।’
‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। নিষিদ্ধ সংগঠনের সন্ত্রা*সীদের ***ভেঙে দেয়া হবে.’ পোস্টে যোগ করেন তিনি।
পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সবকিছু মনিটরিং ও প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টাসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানরা।
বুধবার বিকাল পৌনে পাঁচটার দিকে গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস বলেন, বিকালে তিনজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তারা গুলিবিদ্ধ ছিলেন।
এর আগে, গোপলগঞ্জ ছেড়ে যান এনসিপি নেতাকর্মীরা। সেনাবাহিনী ও পুলিশের পাহারায় তারা গোপালগঞ্জ ছাড়েন।
এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মুশফিক উস সালেহিন এই তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তারা বিকাল ৫টার পরে গোপালগঞ্জ ছেড়ে বের হয়ে যান।
কড়া পাহারায় তাদের ১৫ থেকে ১৬টি গাড়ির বহর গোপালগঞ্জ ছাড়েন। এই বহরে এনসিপি নেতাদের মধ্যে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলমসহ শীর্ষ নেতারা ছিলেন।
এদিকে, এনসিপি সমাবেশ শেষে তাদের ঘিরে হামলার ঘটনার পর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। বুধবার বেলা পৌনে তিনটার দিকে শহরের পৌর পার্কে তাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, এনসিপির সমাবেশ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একদল ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে নেতা-কর্মীদের ঘিরে হামলা চালান। তারা চারদিক থেকে এনসিপির নেতা-কর্মী ও পুলিশের গাড়ি আটকে দেয়। এ সময় পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। এনসিপির নেতাকর্মীরা অন্য দিক দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এদিকে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছেন বলে সাংবাদিকদের জানান জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।