শারজাহর মাটিতে এক নাটকীয়তায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ২০৬ রানের পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করে ২ উইকেটে জয় পেল সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। এই জয় শুধু ম্যাচ জেতা নয়—টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে এটি ইউএই’র সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতা ম্যাচ, একইসঙ্গে প্রথমবারের মতো ২০০’র বেশি রান তাড়া করে জয়ের স্বাদ পেল তারা।
এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা আনল স্বাগতিকরা। সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ হবে ২১ মে, একই ভেন্যুতে।
শেষ ওভারটি যেন সিনেমার চেয়েও বেশি নাটকীয়। জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১২ রান। ক্রিজে ছিলেন হায়দার আলী, যিনি খেলছেন নিজের মাত্র দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। তানজিম হাসান সাকিব প্রথম বলেই দিলেন ওয়াইড, পরের বলে ধ্রুব পরাশার হাঁকালেন ছক্কা। তবে সঙ্গে সঙ্গেই সাকিব ফিরিয়ে দিলেন পরাশারকে দুর্দান্ত এক স্লোয়ারে।
তিন বলে প্রয়োজন মাত্র তিন রান, তখনই এল সেই বিতর্কিত মুহূর্ত—উচ্চ ফুল টস, আম্পায়ার দিলেন নো বল। পরের বলে হায়দার পয়েন্টের উপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দিলেন আকাশে, ফিল্ডিংয়ে এল বিশৃঙ্খলা। তৌহিদ হৃদয় বল থামিয়ে থমকে দাঁড়ালেন, আর সেই সুযোগে ইউএই জোড়া রান নিয়ে নিলো ঐতিহাসিক জয়।
প্রথম ধাক্কা দিয়েছিলেন ইউএই অধিনায়ক মোহাম্মদ ওয়াসিমই। বাংলাদেশের ডেব্যুট্যান্ট নাহিদ রানার প্রথম দুই ওভারেই তুললেন ৩২ রান। ওয়াসিম খেললেন ৪২ বলে ৮২ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস। তাঁর ও আরিয়ান লাখরার (৩৬) ১০৭ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়ে দেয় জয়ের ভিত।
তবে এরপর বাংলাদেশের স্পিনার তানভির ইসলাম জুটি ভেঙে ফেরান লাখরাকে। এরপর হুড়মুড় করে পড়ে ইউএই ব্যাটিং—১৭ বলে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৪৮/২ থেকে ১৭৭/৬। কিন্তু হায়দার আলীর দৃঢ়তায় আর পরাশারের সাহসে শেষ হাসি হাসে স্বাগতিকরা।
এর আগে ব্যাটিংয়ে দারুণ শুরু করে বাংলাদেশ। তানজিদ হাসান তামিম খেলেন ৩১ বলে ৫৮ রানের ঝড়ো ইনিংস। তাঁর সঙ্গে লিটন দাস (৪০), শান্ত (২৭), হৃদয় (৪৫) ও জাকের আলি (১৮*) মিলে বাংলাদেশ তোলে ২০৫ রান—টি-টোয়েন্টিতে দেশের চতুর্থ সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
তবু এমন রানও শেষ রক্ষা করতে পারেননি বোলাররা। ফিল্ডিং ভুল, শেষ ওভারের চাপ এবং আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি—সব মিলিয়ে জয় হাতছাড়া করল বাংলাদেশ।