আবাসন সমস্যার সমাধানসহ তিনি দফা দাবি আদায়ে দ্বিতীয় দিনের মতো রাজধানীর হেয়ার রোডের ‘যমুনা’ চত্বরে বৃহস্পতিবার সকালে আন্দোলন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। দাবি-দাওয়ার সমর্থনে প্রায় একশ শিক্ষার্থী সেখানে অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন শ্লোগান দেন। পাশাপাশি হ্যান্ড মাইকে চলছে বক্তৃতা।
দাবি বুধবার দুপুরে সেখানে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর মধ্য রাতেও সেখানে অবস্থান করেন আন্দোলনকারীরা। শিক্ষার্থীদের আরেকটি অংশ কাকরাইল মোড়ে বৃহস্পতিবার রাতেও অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালানোর ঘোষণা দেন।

এদিকে, রাত ১০টার পরে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ‘যমুনা’ চত্বরে এসে শিক্ষার্থীদের সামনে বক্তব্য রাখেন। তিনি জানান, ‘প্রধান উপদেষ্টা খুব শিগগিরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করবেন। শিক্ষার্থীদের তিন দফা দাবির বিষয়েও আলোচনার মাধ্যমে যৌক্তিক সমাধানের চেষ্টা চলবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সরকার সবসময় যুক্তিসঙ্গত দাবির প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং যে কোনো গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা শুনতে প্রস্তুত।’
তবে তার বক্তব্য শুরু হতেই বিক্ষোভকারীদের ভিড় থেকে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দেওয়া হয়। উত্তেজনাকর পরিবেশে বক্তব্য চলাকালে হঠাৎ করে একদল বিক্ষোভকারী তার দিকে পানির বোতল ছুড়ে মারলে তা সরাসরি উপদেষ্টার মাথায় গিয়ে লাগে। আঘাত পেয়ে তিনি তৎক্ষণাৎ বক্তব্য বন্ধ করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরে প্রায় ১৫ মিনিট পর অবস্থানস্থল থেকে কিছুটা দূরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি চক্র ঢুকে অন্তর্ঘাতের চেষ্টা করছে। যারা আমার ওপর হামলা করেছে, তারা প্রকৃত জুলাই যোদ্ধা নয়।’ তার এই মন্তব্য নতুন করে বিতর্কের জন্ম দেয় আন্দোলনকারীদের মধ্যে।
রাত ১২টার পরে আন্দোলনকারীদের পক্ষে বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন।
তিনি তথ্য উপদেষ্টার ওপর হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা সহিংসতার পক্ষে নই। তবে এ ঘটনার দায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নেবে না।’
তিনি দাবি করেন, ‘ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন এবং আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা হতে পারে।’
শামসুল আরেফিন বলেন, ‘তথ্য উপদেষ্টা যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটি আমাদের দাবির বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট অবস্থান দেয়নি। বরং এটি আরও বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। আমরা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনো পরিষ্কার সরকারি ঘোষণা না আসা পর্যন্ত আমরা এই জায়গা ছাড়ছি না।’
এর আগে, বুধবার দুপুরে পূর্বঘোষিত ‘লং মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচির বিক্ষোভ মিছিল সেগুনবাগিচার কাকরাইল মোড়ে পৌঁছালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ অন্তত ৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে ২৫ জন শিক্ষার্থী ঢাকা মেডিকেল কলেজে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন। পরে শিক্ষার্থীরা আবারও সেখানে জড়ো হন।