বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হামলা, ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা একটি মামলায় আওয়ামী লীগপন্থি ৯৩ জন আইনজীবী রোববার আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তাদের জামিন শুনানির পর আদালত মহিলা ও অসুস্থ বিবেচনায় ৯ জনের জামিন দিয়েছেন। অন্যদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হয়।
রোববার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ জাকির হোসেন গালিবের আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেন ৯৩ জন। দুপুর ২টার দিকে এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। বিকেলে আদালত ৮৪ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। আর ৯ জনের জামিন দেয়া হয় অসুস্থ ও নারী বিবেচনায়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জানা গেছে, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে চলাকালে গতবছর ৪ আগস্ট দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণে ঢুকে বেশ কয়েকজন অস্ত্র, লাঠিসোঁটা নিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। তারা বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ‘শেখ হাসিনার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন। আসামিরা ঢাকা আইনজীবী সমিতির সামনে অবস্থান নেন। তখন বাদী মোহাম্মদ আলী বাবু সেখানে গেলে আসামি আনোয়ার শাহাদাৎ শাওনসহ কয়েকজন তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র তাক করেন।
আইনজীবীদের ওপর হামলা, চেম্বার ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে গত ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ বিষয়ে মামলা করেন আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী বাবু। এতে আওয়ামীপন্থি ১৪৪ জন আইনজীবীকে আসামি করা হয়।
আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করার পর অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করতে কোতোয়ালি থানাকে আদেশ দেন। এ মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন ১১৫ জন আইনজীবী। তাদের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল ৭ এপ্রিল।
আলোচিত এ মামলায় আসামি করা হয় আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক কাজী নজিবুল্লাহ হিরু, ঢাকা মহানগর আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আব্দুল্লাহ আবু, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান বাদল, মো. সাইদুর রহমান মানিক, মো. মিজানুর রহমান মামুন, আব্দুর রহমান হাওলাদার, গাজী মো. শাহ আলম, আব্দুল বাতেন, মাহবুবুর রহমান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক খন্দকার গোলাম কিবরিয়া জুবায়ের, মোহাম্মদ আনোয়ার শাহাদাৎ শাওন, মো. ফিরোজুর রহমান মন্টু, মো. আসাদুজ্জামান খান রচি, সাবেক সংসদ সদস্য সানজিদা খানমসহ ১৪৪ জনকে।
রোববার ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি আবু সাইদ সাগর, সাইদুর রহমান মানিক, গাজী শাহ আলম, মাহবুবুর রহমান, আসাদুজ্জামান রচি, সাইবার ট্রাইব্যুনালের সাবেক পিপি নজরুল ইসলাম শামিম, মোরশেদ হোসেন শাহীনসহ ৯৩ জন জামিন আবেদনসহ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।