নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ইপিজেড) শ্রমিকদের সঙ্গে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় একজন শ্রমিক নিহত এবং আরও ১০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে এ সংঘর্ষ হয়। নিহত শ্রমিকের নাম হাবিবুর রহমান হাবিব (২১), তিনি সদর উপজেলা সংলশী ইউনিয়নের কাজিরহাট এলাকার দুলাল হোসেনের ছেলে এবং উত্তরা ইপিজেডের ইকু ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির কর্মী।
পুলিশের রংপুর রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সংঘর্ষের পর ইপিজেড এলাকায় সেনা ও অতিরিক্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়।
বার্তা সংস্থা ইউএনবি জানায়, নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেড শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন। এ ঘটনায় আরও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
নীলফামারী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আবদুর রহিমকে উদ্ধৃত করে ইউএনবির খবরে বলা হয়, দুইজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং আরও ১৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
যেভাবে সংঘর্ষের সূত্রপাত
স্থানীয়রা জানান, নীলফামারী ইপিজেডে অবস্থিত এভারগ্রিন পরচুলা তৈরীর কারখানার শ্রমিকরা কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করে আসছিলেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে সোমবার কর্তৃপক্ষ অনির্দিষ্টকালের জন্য কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে।
মঙ্গলবার সকালে শ্রমিকরা কর্মবিরতি পালন করতে ইপিজেডের মূল ফটকে প্রবেশের চেষ্টা করলে রক্ষীরা বাধা দেন। এতে শ্রমিকরা প্রধান সড়ক অবরোধ করে এবং যানজট সৃষ্টি হয়। যানজটের কারণে নীলফামারী-সৈয়দপুর মহাসড়কে সৃষ্টি হয় ব্যাপক ভোগান্তি।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হলে দুইপক্ষের মধ্য ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল বিনিময় হয়। পুলিশ শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে দফায় দফায় টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
এ সংঘর্ষের সময় হাবিবুর রহমান নিহত হন এবং আহতদের মধ্যে অন্তত ছয়জনকে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এদিকে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, টানা আন্দোলনের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শ্রমিকরা ২৩ দফা দাবি তুলে ধরেছেন, যার মধ্যে বেতন ও ভাতা সময়মতো পরিশোধ, আবাসন ও পদোন্নতির সমস্যা সমাধান এবং গর্ভবতী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়ার দাবি রয়েছে।