বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ বছরের জুন মাস পর্যন্ত মোট ১.২৫ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সমন্বয় কমিটির ৫ম সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয় সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে প্রাপ্ত বিনিয়োগ প্রস্তাবের মধ্যে বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৪৬৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, স্থানীয় বিনিয়োগ ৭০০ মিলিয়ন ডলার এবং যৌথ বিনিয়োগ প্রস্তাব ৮৫ মিলিয়ন ডলার। এ বছরের সবচেয়ে বড় বিদেশি বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে, যা প্রায় ৩৩০ মিলিয়ন ডলারের। সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগ প্রস্তাব দিয়েছে।
এ ছাড়া, ১.২৫ বিলিয়ন ডলারের প্রস্তাবগুলোর মধ্যে ২৩১ মিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা প্রাথমিক প্রস্তাব থেকে চূড়ান্ত পর্যায়ে রূপান্তরের হার প্রায় ১৮ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী এই রূপান্তরের গড় হার ১৫ থেকে ২০ শতাংশের মধ্যে বলে সভায় জানানো হয়।
বৈঠকে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার জট কমানোর বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হয়। চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কন্টেইনার অনেকদিন ধরে পড়ে ছিল, তবে বর্তমান সরকারের সময়ে বন্দরের গতি ফিরিয়ে আনার জন্য কন্টেইনার জট কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয় এবং গত দুই মাসে এক হাজার কন্টেইনার নিলামে বিক্রি করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা বিশেষ দূত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিলাম কার্যক্রম আরও গতিশীল করার নির্দেশনা দেন। আগামী মাসে আরও ৫০০ কন্টেইনার নিলামে তোলার কাজ চলছে এবং নিলামের পণ্য হস্তান্তরের কাজও চলছে, জানান কর্মকর্তারা।
বিনিয়োগ সমন্বয় কমিটির সভায় বাংলাদেশ বিজনেস পোর্টাল (বিবিপি) চালুর অগ্রগতি সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়। বিডা, বেজা, বেপজা এবং বিসিকের পরিষেবাগুলো একত্রিত করে এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মটির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আগামী সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে সফট লঞ্চিং এবং সেপ্টেম্বরের শেষ নাগাদ প্ল্যাটফর্মটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা হবে বলে সভায় জানানো হয়।
বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।