রবিবার ভোরের আলো ফুটেছে সবে। দুদিনের সাপ্তাহিক ছুটি কাটিয়ে তিলোত্তমা নগরীও আড়মোড়া ভাঙতে শুরু করেছে। রিকশার বেলের টুংটাং, বাংলার ‘টেসলা’ খ্যাত ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার হর্নের আওয়াজও অত ভারী হয়ে ওঠেনি তখনও। তবে গুলিস্তানের জাতীয় স্টেডিয়ামে দল বেধে হাজির ক্রিকেটাররা। কাক ডাকা ভোরে ফুটবল মাঠে তাদের আবার কী কাজ? অবশ্য ফুটবল খেলতে নয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, নাহিদ রানা, তাসকিন আহমেদরা সেখানে গেছেন অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে দৌড়ে ফিটনেস টেস্ট দিতে।
এশিয়া কাপের প্রাথমিক স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়ে সকাল ৬টায় শুরু হয়ে সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলেছে ফিটনেস টেস্ট। ট্রেনার নাথান কেলির অধীনে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে টেস্ট দিয়েছেন ২৬ জন ক্রিকেটার। যদিও লিটন দাস, তাওহিদ হৃদয় ছিলেন না টেস্ট দিতে। প্রাথমিক দলে থাকা আরো চার ক্রিকেটার আসতে পারেননি ‘এ’ দলের হয়ে অস্ট্রেলিয়া সফরে থাকায়।
৪০০ মিটারের ট্র্যাকে টানা চার চক্কর দিতে হয়েছে তাদের। প্রথমে দৌড়েছেন ১১ জন। তাদের মধ্যে মাত্র ৫ মিনিট ৩১ সেকেন্ডে ১৬০০ মিটার সম্পন্ন করেছেন নাহিদ রানা। মাঠের পারফরম্যান্সে সাম্প্রতিক সময়টা ভালো না কাটলেও ফিটনেসে যে নাহিদ বাকিদের চেয়ে এগিয়ে আছেন, সেটার প্রমাণ তার এই টাইমিং। নিজের বোলিংয়ের মতো সবচেয়ে জোরে ছুটেছেন তিনি।
দ্বিতীয় গ্রুপের ১৫ জনের মধ্যে প্রথম হয়েছেন আরেক পেসার তানজিম হাসান সাকিব। চার চক্কর দিতে এই ডানহাতি পেসার সময় নিয়েছেন ৫ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড। অর্থাৎ দুই গ্রুপ মিলিয়ে সবার সেরা নাহিদই। ক্লাসের এই ‘ফার্স্ট বয়’-কে নিয়ে আরেক পেসার তাসকিন তাই বলে উঠলেন, ‘তোরে অলিম্পিকে পাঠামু মামা!’ ফিটনেস টেস্ট দিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে সাবেক অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও বলে গেলেন, ‘ওরে অলিম্পিকে পাঠাব’
মেহেদী হাসান মিরাজ পুরো ট্র্যাকে চারবার দৌড়ানো সম্পন্ন করেছেন ৬ মিনিট ১ সেকেন্ডে, সৌম্য সরকারের লেগেছে ৬ মিনিট ১৯ সেকেন্ড। কেবল টেস্ট ফরম্যাটে থাকা মুশফিকুর রহিম এশিয়া কাপের প্রাথমিক দলে না থাকলেও টেস্ট দিয়েছেন। ৩৮ বছর বয়সেও ১৬০০ মিটার শেষ করেছেন ৬ মিনিট ১০ সেকেন্ড সময় নিয়ে।
ফিটনেস নিয়ে পেসার তানজিম যে একটু আলাদা কাজ করেন সবসময় সেটার প্রমাণ দিলেন এবারও। ২০২৪ সালের এপ্রিলে হওয়া ফিটনেস টেস্টেও প্রথম হয়েছিলেন তিনি। যদিও দ্বিতীয় গ্রুপের টেস্টে তার সাথে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে স্পিনার নাসুম আহমেদের। শুরুতে নাসুম এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয় ল্যাপেই এগিয়ে যান সাকিব।
ফিটনেস টেস্টের জন্য জাতীয় দলের বেঞ্চমার্ক আছে তিনটি। ৫ মিনিট ৪০ সেকেন্ড দৌড় শেষ করলে, তাকে রাখা হবে এলিট ক্যাটগরিতে। ৬ মিনিট ৪০ সেকেন্ড থেকে ৬ মিনিট ২০ সেকেন্ডের মধ্যে কেই চার ল্যাপ শেষ করলে তাকে ধরা হবে কম্পিটেন্ট হিসেবে। কারো এর চেয়ে বেশি সময় লাগলে তাকে রাখা হবে লিমিটেড ক্যাটাগরিতে। যেখানে এবার আছেন, তাসকিন আহমেদ, শামীম পাটোয়ারী আর তানভীর ইসলাম।