জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে কমিশনের আজকের আলোচনায় প্রধান বিচারপতি নিয়োগ সংক্রান্ত দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে—সংবিধানের ৯৫ অনুচ্ছেদের বিদ্যমান ব্যবস্থা পরিবর্তন এবং রাষ্ট্রপতি আপিল বিভাগের বিচারপতিদের মধ্য থেকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করবেন।’
বৃহস্পতিবার ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১১তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যমান সংবিধানে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে, প্রধান বিচারপতি হিসেবে কর্মে নিযুক্ত জ্যেষ্ঠতম একজনকে না করে কর্মে জ্যেষ্ঠ দুজনের মধ্যে একজন নিয়োগ করা হবে—এই বিষয়ে দুটি মত উপস্থিত আছে। কমিশন এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
জরুরি অবস্থা ঘোষণা সংক্রান্ত বিষয়ে ৭ জুলাইয়ের আলোচনায় সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৪১(ক) সংশোধন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা যেন রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে অপব্যবহার না হয়—এই দুটি বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, যোগ করেন তিনি। খবর ইউএনবির।
আলোচনায় অনুচ্ছেদ ১৪১(ক) সংশোধনের ‘অভ্যন্তরীণ গোলযোগের’ জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণার বিধান অপসারণ এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরের পরিবর্তে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের বিধান যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে, এ বিষয়টা আরও সুনির্দিষ্ট করতে হবে। এক্ষেত্রে আরও কী কী বিষয় সংযুক্ত করা যায়, সেসব পরবর্তী সপ্তাহের আলোচনায় সুস্পষ্ট হবে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে রীয়াজ বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে প্রতিটি রাজনৈতিক দল এমন একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যা কার্যত যতদূর সম্ভব ত্রুটিহীন হয় এবং যে ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে চলমান আন্দোলন-সংগ্রামের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটে। এই বিষয়েও আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এদিনের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।