সেপ্টেম্বরের ফিফা উইন্ডোতে নেপালের বিপক্ষে দুইটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ইউরোপীয় দলের বিপক্ষে ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ায়, বিকল্প হিসেবে এই ম্যাচগুলোর আয়োজন করা হচ্ছে। ৭ জুলাই এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে অল নেপাল ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন নিশ্চিত করেছে, ম্যাচ দুটি আগামী ৬ ও ৯ সেপ্টেম্বর কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) শুরুতে ইউরোপের কোনো দলের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ খেলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ইউরোপ (উয়েফা) এবং এশিয়ার (এএফসি) বেশিরভাগ দলই বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব ও অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে ব্যস্ত থাকায়, বাফুফেকে এশিয়ার মধ্যেই সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ খুঁজতে হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় শ্রীলঙ্কা এবং নেপালের সঙ্গে আলোচনা হয়। তবে শ্রীলঙ্কা ভুটানের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে চায় কলম্বোতে, অন্যদিকে নেপাল বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানায় ম্যাচ খেলতে — সেই প্রস্তাবই শেষ পর্যন্ত গ্রহণ করে বাফুফে।
যদিও নেপাল ইতোমধ্যে ম্যাচগুলোর আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে, বাংলাদেশের ফুটবল ফেডারেশন এখনো এই ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
এই প্রীতি ম্যাচগুলো মূলত প্রস্তুতি হিসেবেই দেখা হচ্ছে বাংলাদেশের পরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের জন্য — ৯ অক্টোবর ঢাকায় এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে হংকংয়ের মুখোমুখি হবে লাল-সবুজরা। হংকং বর্তমানে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১৫৩তম, অন্যদিকে নেপাল রয়েছে ১৭৩তম অবস্থানে। ফলে এমন এক তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচ খেললে আদৌ প্রস্তুতি কেমন হবে, তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
অনেকেই জাতীয় দলের স্প্যানিশ কোচ হাভিয়ের কাবরেরার সমালোচনা করে বলছেন, তিনি নিয়মিত দক্ষিণ এশিয়ার দলের বিপক্ষে ম্যাচ আয়োজনেই সীমাবদ্ধ থাকছেন। গত ১০ জুন ঢাকায় সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ খেলার আগে বাংলাদেশ ভুটানের বিপক্ষে খেলেছিল — সেই ম্যাচে ২-০ গোলের জয় মিললেও, সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ২-০ গোলে হেরে যায় দল। এতে আবারও স্পষ্ট হয় বড় দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের দুর্বলতা।
এই প্রেক্ষাপটে নারী দলের পারফরম্যান্স একেবারেই আলাদা। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ১২৮ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ নারী দল এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের আগে জর্ডান ও ইন্দোনেশিয়ার মতো শক্তিশালী দলের মুখোমুখি হয় — যারা র্যাঙ্কিংয়ে অন্তত ৩০ থেকে ৫০ ধাপ উপরে। এর সুফলও মিলেছে হাতেনাতে — তারা পরে বাহরাইন ও মিয়ানমারকে হারিয়ে চমক দেখিয়েছে, যারা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে র্যাঙ্কিংয়ে।
নারী দল যেখানে নিজেরা উন্নতির জন্য কঠিন প্রতিপক্ষ বেছে নিচ্ছে, সেখানে পুরুষ দল এখনও বারবার দক্ষিণ এশিয়ার দল — মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল — এই চেনা গণ্ডির মধ্যেই ঘুরপাক খাচ্ছে।
এখন দেখার বিষয়, কাঠমান্ডুর এই দুই ম্যাচ আসন্ন হংকং ম্যাচের প্রস্তুতিতে আদৌ কাজে আসে কি না।