চট্টগ্রামের পটিয়ায় এক ছাত্রলীগ নেতাকে থানায় সোপর্দ করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১১ জন শিক্ষার্থী আহত হন। আহতদের মধ্যে দু’জন বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকাল থেকে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অবরোধ করে পটিয়া থানার সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকলেও বিকল্প বাইপাস সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে দেওয়া এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘জুলাই দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচি শেষে থানার সামনে শান্তিপূর্ণ স্লোগান দেওয়ার সময় পুলিশ হঠাৎ লাঠিচার্জ করলে পটিয়া থানা চত্বর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।’
দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক গোলাম মওলা মাশরাফ বলেন, ‘পুলিশ এখন ‘‘বট’’, দুই নম্বর ও ‘‘ফাও’’ হয়ে গেছে। চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজদের রক্ষা করছে আর নিরীহ ছাত্রদের পেটাচ্ছে। আমরা মৃত্যুকে ভয় পাই না, এই বিপ্লব মরার জন্যই করছি।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ধরতে ব্যর্থ পুলিশ এখন আন্দোলনকারীদের হুমকি দিচ্ছে। তবে আমরা থেমে থাকব না।’
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. নওশাদ জানান, ‘আহতদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
গুরুতর আহতরা হলেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আশরাফুল ইসলাম তৌকির (২১) ও সাইফুল ইসলাম (১৭)।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা রাঙামাটির ছাত্রলীগ নেতা দীপংকরকে মোমবাতি প্রজ্বলন কর্মসূচির পর থানায় নিয়ে আসেন। কিন্তু তার নামে কোনো মামলা না থাকায় পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হলে পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাহেদ মো. নাজমুন নূর বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা ছাত্রলীগের এক নেতাকে থানায় নিয়ে এসে মারধর করেন। এ সময় ধস্তাধস্তিতে আমাদের ৩-৪ জন পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন।’
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, আন্দোলনকারীরা ওসির অপসারণের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।