জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের দাবি নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নবনির্বাচিত কমিটি। নতুন এ কমিটির সভাপতি রিফাত রশিদ।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদের দাবি নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এ কমিটি।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নবনির্বাচিত সভাপতি রিফাত রশিদ বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে সংঘটিত গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
৩ আগস্ট শহীদ মিনারে ঘোষিত এক দফা ছিল শুধু রেজিম পরিবর্তন নয়, বরং ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা বিলোপ করে একটি নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের প্রতিশ্রুতি। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মনে করে, ‘বাংলাদেশ ২.০’ গড়ার ঐতিহাসিক ভিত্তি তৈরি হয়েছে এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে, যোগ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে রিফাত রশিদ সংগঠনের খসড়া ইশতেহার পাঠ করেন। খসড়া ইশতেহারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ প্রদানের দাবির তোলেন।
সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংস্কার ব্যতীত নির্বাচনের কোনো সুযোগ নেই। যদি কেউ নির্বাচন করতে চায়, বাংলাদেশের ছাত্র জনতার রক্তের সঙ্গে তারা বেইমানি করবে এবং আমরা সেটি প্রতিহত করব।’
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা ছাড় দেওয়ার মানসিকতা তৈরি করুন। আপনারা যা বলছেন তাই সঠিক এবং বাকিরা যা বলছে তা ভুল এই জায়গা থেকে আপনারা সরে আসুন। সকলের একত্রিত স্বার্থ যেখানে রচিত হবে সেখানেই আপনারা ফিরে যান।’
ইশতেহারে আরও বলা হয়, ‘জুলাই ২০২৪-এর ছাত্র অভ্যুত্থান আমাদের দেখিয়েছে—সংগঠিত ছাত্রসমাজ চাইলে কীভাবে শিক্ষা-প্রশাসন ও ক্ষমতাকেন্দ্রিক দমননীতি রুখে দিতে পারে।’
রিফাত রশিদ আরও জানান, এই ইশতেহার মূলত একটি খসড়া হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে। আগামী দিনগুলোতে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, শিক্ষক সমাজ ও নাগরিকদের মতামতের ভিত্তিতে এটি চূড়ান্ত করা হবে।
নবপর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে আরও সুসংহত ও সংগঠিত করার লক্ষ্যে তিনটি বিশেষায়িত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রথমত, লিয়াজোঁ কমিটি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সকল অংশীজন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি, রাজনৈতিক দল, ছাত্রসংগঠন এবং জুলাই ভিত্তিক গড়ে ওঠা প্ল্যাটফর্মগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐক্য গঠনের উদ্দেশে কাজ করবে, যার নেতৃত্বে থাকবেন সংগঠনের সভাপতি।
একই সঙ্গে, আন্দোলনের আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যা ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করবে; এই সময়ে আন্দোলনের সকল ইউনিটের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
সাংগঠনিক সম্পাদকের নেতৃত্বে জুলাই শোক ও স্মৃতি উদযাপন কমিটি পুরো জুলাই মাস জুড়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে শোক পালন এবং ফ্যাসিস্ট পলায়নের আনন্দ উদযাপনের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক মো. ইনামুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক মুঈনুল ইসলাম ও মুখপাত্র সিনথিয়া জাহীন আয়েশা।