ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধের ১২তম দিনে যুদ্ধ বিরতির ঘোষণা দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউজের অফিসিয়াল এক্স একাউন্ট থেকে সমাজ মাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে লেখা ট্রাম্পের অন্ততঃ চারটি পোস্ট শেয়ার করে এ খবর জানানো হয়েছে।
এর প্রথমটিতে ট্রাম্প একবাক্যে লেখেন, ‘অভিনন্দন বিশ্ব, এখন শান্তির সময়!’ বাকি পোস্টগুলো এ সংক্রান্ত ট্রাম্পের বিবৃতি।
বিবিসির লাইভ নিউজে বলা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষ্য অনুযায়ী ‘কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই’ ওই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। তবে ইরানি রাষ্ট্রীয় ও অন্যান্য সংবাদমাধ্যম এখন পর্যন্ত এটিকে কেবল ‘ট্রাম্পের দাবি’ বলেই উল্লেখ করছে, অর্থাৎ তারা এখনই একে নিশ্চিতভাবে স্বীকার করছে না।
এই অবস্থায় ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) তেহরানের তিনটি পৃথক জেলার জন্য রাতেই সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এর পাশাপাশি, ইরানজুড়ে একাধিক বিস্ফোরণের খবর পাওয়া যাচ্ছে। ইরানে বর্তমানে রাত ২টা পেরিয়ে গেলেও পরিস্থিতি এখনও থমথমে।
ট্রাম্পের ঘোষণায় স্পষ্ট করে বলা হয়েছিল, যুদ্ধবিরতি সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর হবে না, বরং কয়েক ঘণ্টা পরে শুরু হবে। ফলে বাস্তবতা ও ঘোষণার মধ্যে সময় ব্যবধান থেকেই যাচ্ছে, আর এ সময়ের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠছে কি না, সে নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
সার্বিকভাবে, ট্রাম্পের ঘোষণার পরও মাঠের বাস্তবতা এবং ইরানি প্রতিক্রিয়ার মধ্যে স্পষ্ট ফারাক রয়েছে, যা এই সংঘাতপূর্ব পরিস্থিতিকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে।
একদিন আগেই ইসরায়েল ও মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জেরে কাতারে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ঘাঁটিতে প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা চালায় ইরান।
সে সময় এর তীব্র প্রতিবাদ জানায় কাতার সরকার। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাজেদ আল-আনসারি সমাজ মাধ্যম এক্স-এ দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা এই হামলাকে কাতারের সার্বভৌমত্ব, আকাশসীমা, আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘ সনদের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে দেখছি।’
তিনি জানান, হামলার আগে ঘাঁটি থেকে সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং কাতারের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সফলভাবে প্রতিহত করতে সক্ষম হয়েছে।
আল-আনসারি বলেন, ‘ঘাঁটির সকল ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, যার মধ্যে কাতারের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য, মিত্র বাহিনীর সদস্য ও অন্যান্যরা অন্তর্ভুক্ত।’
তিনি নিশ্চিত করেন, এই হামলায় কারো মৃত্যু বা আহত হওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।
কাতার আরও জানিয়েছে, এই ‘দৃশ্যমান আগ্রাসনের’ বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী এবং ঘটনার মাত্রা অনুযায়ী উপযুক্ত জবাব দেওয়ার অধিকার তারা সংরক্ষণ করে।
বিমানঘাঁটি আল-উদেইদ কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক স্থাপনা, যেখানে হাজার হাজার মার্কিন ও মিত্রবাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।