সেই ২০০৮ সালের পর প্রথমবারের মতো বড় কোনো ট্রফির দেখা পেল টটেনহ্যাম হটস্পার। আর প্রতিপক্ষ? ইউরোপের গগনচুম্বী ইতিহাস গড়া ক্লাব ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড! স্প্যানিশ শহর বিলবাওর সান মামেস স্টেডিয়ামে ইউরোপা লিগের রোমাঞ্চকর ফাইনালে ১-০ গোলে জিতে টটেনহ্যাম শেষ করল ১৭ বছরের অপেক্ষার পালা।
ম্যাচের একমাত্র গোলটি আসে প্রথমার্ধের শেষ দিকে। ৪২ মিনিটে লুক শ’র এক ভুল ক্লিয়ারেন্সের সুযোগ নিয়ে বল দখলে নেন ব্রেনান জনসন। ঠান্ডা মাথায় জোরালো শটে বল পাঠিয়ে দেন জালের ঠিকানায়। আর তাতেই জয়ের ভিত গড়ে তোলে স্পার্সরা।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যান ইউ একের পর এক আক্রমণ শানালেও, রক্ষণে দুর্ভেদ্য প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায় আনজে পোস্টেকগলুর শিষ্যরা। ম্যাচের সবচেয়ে নাটকীয় মুহূর্ত আসে মিকি ভ্যান দে ভেনের এক অসাধারণ গোললাইন সেভে। রাসমুস হøইলুন্ডের হেড যখন প্রায় নিশ্চিত গোল হয়ে যাচ্ছিল, তখন আকাশ ছোঁয়া লাফ দিয়ে বল ঝাঁপটে ধরে গোল বাঁচান ডাচ ডিফেন্ডার।
ক্যাপ্টেন হিসেবে প্রথমবার ট্রফি হাতে তুললেন সন হিউং-মিন। ২০০৮ সালে লেডলি কিংয়ের পর তিনিই প্রথম স্পার্স নেতা, যিনি কোনো শিরোপা জিতলেন। এই জয়ে টটেনহ্যাম নিশ্চিত করল আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়নস লিগে অংশগ্রহণ, ইউরোপিয়ান ফুটবলের অভিজাত আসরে আবারও নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার দারুণ সুযোগ।
অন্যদিকে, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের জন্য এই হার যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা। এমনিতেই প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অবস্থানে থেকে মৌসুম শেষ করেছে তারা। আর ইউরোপা লিগের ফাইনাল হার, সঙ্গে কোনো ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টে জায়গা না পাওয়ার শঙ্কা—সব মিলিয়ে চাপে রয়েছেন কোচ এরিক টেন হাগ। ক্লাব পরিচালনা পর্ষদ ও সমর্থকদের মধ্যে তার ভবিষ্যৎ নিয়ে গুঞ্জন এখন তুঙ্গে।
কিন্তু আজকের রাত টটেনহ্যামের। এটি শুধুই একটি শিরোপা জয় নয়, এটি তাদের হার না মানা মানসিকতার গল্প। ১৭ বছরের যন্ত্রণার অবসান ঘটিয়ে, এই রাতটিকে চিরস্মরণীয় করে রাখলেন জনসন, ভ্যান দে ভেন, সনরা—টটেনহ্যামের ইতিহাসে নতুন একটি সোনালি অধ্যায় যোগ হলো।