স্বাধীনতাবিরোধীরাই চব্বিশকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে: নজরুল ইসলাম

টাইমস রিপোর্ট
3 Min Read
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ফাইল ছবি

একাত্তরে যারা স্বাধীনতা মেনে নিতে পারেনি, তারাই চব্বিশের অভ্যুত্থানকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে–এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, ‘কেউ বিপ্লব বলে, কেউ এটাকে দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলার চেষ্টা করে। চব্বিশকে মহিমান্বিত করার জন্য এটা মুক্তিযুদ্ধের সমান করে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এটা শুধু তাদের প্রয়োজন যারা একাত্তরের স্বাধীনতাকে এখনো মনে প্রাণে মেনে নিতে পারে না।’

রোববার রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত ‘ভোটারধিকার প্রতিষ্ঠায় জুলাই অঙ্গীকার’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, ৯০-এর গণঅভ্যুত্থান এবং বর্তমান ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে যোগসূত্রও টানেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমরা এখনো ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণ করি। কারণ, তারা ছিলেন আমাদের চেতনার বারুদে নিক্ষিপ্ত প্রথম অগ্নিস্ফুলিঙ্গ । তারা আমাদের চেতনার বারুদে আগুন ধরিয়ে দিয়েছিলেন। ফলে আমরা আমাদের মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করেছি। ওই সমুন্নত চেতনা সেটাকে ধারণ করে আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি। আর সেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে আমরা ৯০-এ ছাত্র গণঅভুত্থান করেছি।’

সেই চেতনার ধারাবাহিকতায় আমরা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। স্বৈরাচার ফ্যাসিবাদে পরিণত হয়েছে। সেই ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি এবং আমরা দেশকে মুক্ত করেছি। শুধু শাসক বদলানোর জন্য এই লড়াই হয়নি, যোগ করেন তিনি।

পিআর পদ্ধতি নিয়েও নজরুল ইসলাম খান প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ’২৪-এর গণঅভুত্থানে স্লোগানে যে বক্তব্য, যে দাবি তার মধ্যে কি পিআর সিস্টেমের কথা ছিল? তার মধ্যে উচ্চকক্ষের কথা ছিল? আপনার এই বিষয়গুলোতে যদি মনে হয় এটা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা চেতনা তাহলে তো মুশকিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘কেউ নানা জোট তৈরির চেষ্টা করছেন। কিছুদিন আগেও যারা একজন আরেকজনকে বেইমান বিধর্মী বলেছেন তারা এখন ঐক্যবদ্ধ হয় চেষ্টা করছেন।

’অনেকেই বলে বিএনপি যদি রাষ্ট্র ক্ষমতার দায়িত্ব পায় তাহলে বিচার বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কিংবা বিচার বিরোধিতা হতে পারে। যারা বলে তাদেরকে জিজ্ঞাসা করি যে আপনাদের কয়জন শহীদ হয়েছেন? আপনাদের কয়জন নেতাকর্মী গুম-খুন হয়েছেন? আপনাদের কতজন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আমাদের মতো মামলা হয়েছে?’ বলেন তিনি।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমরা প্রতিটি শহীদের অবদানকে সম্মান করি। তিনি রাজনৈতিক নেতা, ছাত্র, দোকানদার বা রিকশাচালক—যেই হোন না কেন, তাদের আত্মত্যাগ সমান মর্যাদার। আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা। যদি তা করতে ব্যর্থ হই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদের জবাবদিহি করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা যদি যারা শহীদ হয়েছেন তাদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ ব্যর্থ হই, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে আমাদেরকে জবাবদিহিতা করতে হবে যুগ যুগ ধরে।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *