নতুন বছর, নতুন মিশন — বেন স্টোকসের ইংল্যান্ড বৃহস্পতিবার ট্রেন্ট ব্রিজে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলেই শুরু করছে এক দারুণ গুরুত্বপূর্ণ রেড-বল অভিযান। চার দিনের এই ম্যাচটা যদিও ‘ছোট দলের’ বিপক্ষে, কিন্তু ইংল্যান্ডের সামনে এবার দুইটা বড় সিরিজ — ভারতের মাটিতে পাঁচ টেস্ট, আর পরে ঘরের মাঠে অ্যাশেজের পুনরুদ্ধার।
আর তাই এই ম্যাচটাকে নিছক ‘তামাশা’ মনে করলে ভুল হবে। এটা যেন এক গভীর নিঃশ্বাস নেওয়ার মতো মুহূর্ত—্লম্বা এক ঝাঁপ দেওয়ার আগে।
দীর্ঘ চোটের পর বেন স্টোকস ফিরেছেন দলে, সেটাও একজন পূর্ণ অলরাউন্ডার হিসেবে। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে ডিসেম্বর থেকে মাঠের বাইরে ছিলেন, এখন আবার বল হাতেও দেখা যাবে তাকে। তবে পুরোপুরি ফিট কিনা, সেটাই বড় প্রশ্ন।
চোট থেকে ফেরার পথটা সহজ ছিল না। নিজের রিকভারি প্রক্রিয়ায় মনোযোগ দিতে গিয়ে স্টোকস নাকি মদও ছেড়ে দিয়েছেন! ‘Untapped’ পডকাস্টে বলেছেন—“এখনকার ব্যস্ত সূচিতে শরীর সামলাতে গেলে একটু পেশাদার হতে হয়।”
ইংল্যান্ডের জন্য এটা বিশাল ব্যাপার। কারণ যদি স্টোকস বলও করতে পারেন, তাহলে একজন বাড়তি পেসার খেলিয়েও ব্যাটিং শক্ত রাখা যাবে। কিন্তু তার শরীর কি সেই লোড নিতে পারবে? ভারতের স্পিন আর অস্ট্রেলিয়ার পেসের মুখোমুখি হওয়ার আগে এই প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।
এই প্রথম, এক দশকের বেশি সময় পর, ইংল্যান্ডের হোম টেস্ট দলে নেই স্টুয়ার্ট ব্রড বা জেমস অ্যান্ডারসন। দুই জন মিলে মোটে ১,৩০৮ উইকেট নিয়েছেন—একটা যুগের অবসানই বলা যায়।
তাদের শূন্যতা পূরণে এসেছেন নতুন মুখ—স্যাম কুক, এসেক্সের নির্ভরযোগ্য পেসার। গতি বেশি না হলেও, লাইনে-লেন্থে নিখুঁত। ২০-এর নিচে বোলিং গড়, ৩২১ উইকেট — চোখে পড়বেই।
তবে সমস্যা অন্য জায়গায়। আর্চার, উড, স্টোন — সবাই চোটে কাবু। তাই ইংল্যান্ডের পেস আক্রমণ এখন খুঁজছে টিকে থাকার মুখ।
বাজবলের গল্প যতই হোক, ইংল্যান্ডের টপ অর্ডার এখনও ঝুলে আছে অনিশ্চয়তায়। জ্যাক ক্রাউলি এখনও ‘আক্রমণাত্মক’ ট্যাগে ভরসা পাচ্ছেন, কিন্তু ৫৩ টেস্টে গড় মাত্র ৩০!
ওলি পোপও নিয়মিত সুযোগ পাচ্ছেন, কিন্তু তিন নম্বরে এখনও নেই কোনো ধারাবাহিকতা। জো রুট পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন—তিনে ফিরবেন না। তাই পোপের জায়গা নিয়েই বেশি কথা।
সবমিলিয়ে, দলটা এখনও ভরসা রাখছে রুট আর হ্যারি ব্রুকের ওপর। কিন্তু সামনে যেসব প্রতিপক্ষ, শুধু দুজন দিয়ে পেরোনো যাবে না।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটা বড় সিরিজের আগে লাইন মেলানোর সুযোগ। কিন্তু যতই প্রস্তুতির কথা বলি, মুম্বাইয়ের ঘূর্ণি কিংবা মেলবোর্নের চাপে যদি পা কাঁপে, তাহলে বাজবলের জাদুও খেই হারাবে। তাই শুরুটা ‘ছোট দল’ দিয়ে হলেও, দৃষ্টি রাখতে হবে অনেক দূর।