প্রহসনের মাধ্যমে নির্বাচন ও রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ, সাবেক নয় নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনের দুই সচিবের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মহানগর হাকিম মিনহাজুর রহমান এ আদেশ দেন।
তদন্ত কর্মকর্তার আবেদন অনুযায়ী দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা পাওয়া অন্যরা হলেন-সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবু হাফিজ, মো. শাহ নেওয়াজ, মো. জাবেদ আলী, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও মো. আহসান হাবিব খান, মো. আলমগীর ও মো. আনিছুর রহমান, সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ ও মোহাম্মদ সাদিক।
এদিন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক সৈয়দ সাজেদুর রহমান তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, উল্লিখিত ১২ আসামি বর্তমানে পলাতক। মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন। শুনানির পর বিচারক আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
সিএমএম আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ শামসুদ্দোহা সুমন এসব তথ্য জানান।
চলতি বছরের ২২ জুন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব ‘পালন না করে’ উল্টা ‘ভয়-ভীতি দেখিয়ে’ জনগণের ‘ভোট ছাড়াই’ নির্বাচন সম্পন্ন করার অভিযোগে মামলা করে বিএনপি। এরপর মামলায় রাষ্ট্রদ্রোহ, প্রতারণা ও বিশ্বাস ভঙ্গের ধারা যোগ করা হয়।
মামলায় ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময়কার প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, ২০১৮ সালের নির্বাচনে সিইসির দায়িত্ব পালন করা এ কে এম নূরুল হুদা ও ২০২৪ সালের নির্বাচনে সিইসি পদে থাকা কাজী হাবিবুল আউয়ালকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ মামলার আসামি।
সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, এ কে এম শহীদুল হক, জাবেদ পাটোয়ারী, বেনজির আহমেদ ও চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকেও আসামি করা হয়েছে মামলায়।
২২ জুন সাবেক সিইসি কে এম নূরুল হুদাকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১ জুলাই তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
২৫ জুন মগবাজার এলাকা থেকে আরেক সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়ালকে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে এই সাবেক দুই সিইসি কারাগারে রয়েছেন।
এর আগে গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত বছরের ২৩ অক্টোবর নির্বাচন কমিশনের সাবেক সচিব হেলালুদ্দীন আহমদকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঢাকার পল্টন থানার হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।