একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নে দুই থেকে তিন বছর সময় লাগতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল।
রোববার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। সেখানে তিনি পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর উদাহরণ তুলে ধরে আরও জানান, অনেকে সংবিধান প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় আট থেকে নয় বছর পর্যন্ত সময় নিয়েছে।
‘নাগরিক কোয়ালিশন’ নামের যে প্ল্যাটফর্ম এই আলোচনার আয়োজন করে, তারা সংবিধান সংস্কার নিয়ে সাতটি প্রস্তাব তুলে ধরে। এই জোটে বিভিন্ন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা আছেন।
আলোচনার শুরুতে জোটের যুগ্ম-আহ্বায়ক ও খ্যাতিমান আলোকচিত্রী শহিদুল আলম স্বাগত বক্তব্য দেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান সাতটি প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, আর অর্থনীতিবিদ ও লেখক জিয়া হাসান এসব প্রস্তাব বাস্তবায়নের কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন।
আলোচনাকালে সংবিধান প্রণয়নের দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কথা তুলে ধরে অধ্যাপক নজরুল বলেন, ‘তাহলে কি এর মধ্যে আমরা ১৯৭২ সালের সংবিধান চালু রাখব? নতুন সংবিধান গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান সংসদই সাংবিধানিক পরিষদ হিসেবে কাজ করবে এবং প্রয়োজনে ১৯৭২ সালের সংবিধানে সংশোধনী আনবে।’
‘যখন একটি সংসদকেই সংবিধান রচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়, তখন তারা পর্যাপ্ত সময় দিতে পারে না। অনেক সময় তারা সপ্তাহে মাত্র দুই দিন বসে, এক বা চারটি অধিবেশন করে। এমন পরিস্থিতিতে ৯০ দিনের মধ্যে সংবিধান প্রণয়নের প্রত্যাশা করা অত্যন্ত উচ্চাশা।’
জুলাই সনদে প্রস্তাবগুলোর জোর দেওয়া প্রসঙ্গে আসিফ নজরুল বলেন, ‘জুলাই সনদের ওপর কিছুটা অতিরিক্ত নির্ভরতা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এতে এত বিস্তারিত কিছু কি থাকবে? সেগুলো তো সংবিধানেই অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। মনে করা হচ্ছে সবাই সনদের বিষয়বস্তু নিয়ে একমত হবে, বিষয়টা এত সহজ নয়। সম্ভবত কেবল এর মৌলিক নীতিগুলোই সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা যাবে।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় ঐক্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিহুল্লাহ, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদি আমিন, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, এনডিএম সভাপতি ববি হাজ্জাজ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী উমামা ফাতেমা এবং গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।