মধুপুরে আনারসের বাম্পার ফলন, বিপুল বাণিজ্য সম্ভাবনা

টাইমস রিপোর্ট
2 Min Read
মধুপুরের বাজারে আনারস নিয়ে যাচ্ছেন কৃষক। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

টাঙ্গাইলের মধুপুর আনারসের জন্য দেশজুড়ে পরিচিত। ১৯৪২ সালে গারো সম্প্রদায়ের মিজি দয়াময়ী সাংমা ভারতের মেঘালয় থেকে ৭৫০টি চারা এনে দেশে প্রথম আনারস চাষ শুরু করেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষ হলেও মধুপুরের আনারস এখন জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) পণ্য হিসেবে স্বীকৃত, যা ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরে স্বীকৃতি পায়।

এই বছর অনুকূল আবহাওয়ার কারণে মধুপুরে আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ৭ হাজার ৭৯৪ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৭২ হাজার মেট্রিক টনের বেশি আনারস উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে। মধুপুরের গারোবাজার, জলছত্র ও মোটের বাজারে প্রতিদিন ১০ লাখের বেশি আনারস বিক্রি হচ্ছে, যা প্রতিদিন প্রায় ৩ কোটি টাকার ব্যবসা তৈরি করছে। পুরো মৌসুমে বাণিজ্যের পরিমাণ ২০০ কোটি টাকার বেশি হবে বলে কৃষি বিভাগ আশা করছে।

কৃষকরা জানিয়েছেন, প্রতি আনারসের উৎপাদন খরচ ১৫-১৮ টাকা হলেও বাজারে ছোট আনারস ২০, মাঝারি ২৫-৩৫ এবং বড় আনারস ৩৫-৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ী উজ্জ্বল মিয়া জানান, তিনি প্রতিদিন ২-৩ হাজার আনারস কিনে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করছেন।

উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা রকিব আল রানা বলেন, ‘চলতি মৌসুমে আনারসের বাম্পার ফলন হয়েছে। আকারে বড় হওয়ায় দামও ভালো পাচ্ছেন কৃষকেরা। বিদেশে সরাসরি রপ্তানি এবং আনারস দিয়ে জেলিসহ নানা উপকরণ তৈরি করে বিপণনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।

এ নিয়ে কৃষি বিভাগ ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।

টাঙ্গাইল মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড টেকনোলজি অ্যান্ড নিউট্রিশন সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আজিজুল হক বলেন, ‘জিআই স্বীকৃতি পেয়েছে মধুপুরে আনারস। সেক্ষেত্রে কৃষির একটা আলাদা স্বীকৃতি এটা।’

তিনি মনে করেন, জিআই স্বীকৃতি পাওয়া আনারসের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত চাষি ছানোয়ার হোসেন মনে করেন, জিআই স্বীকৃতি মধুপুরের আনারসকে বিশ্ববাজারে বিশেষ পরিচিতি দিয়েছে। তবে রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং মান বজায় রাখতে সরকারি সহায়তা বাড়ানো জরুরি।

এ বছর ২১০ জন চাষিকে প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে আনারসের চারা দেওয়া হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত আনারস সংগ্রহ ও বিপণন চলবে।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *