সিলেটে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে জেলার সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্যপরিষদ। মঙ্গলবার থেকে ৬ দফা দাবিতে তারা এ ধর্মঘট পালন করবেন।
সোমবার সন্ধ্যায় সিলেটের একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সিলেট সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্যপরিষদ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন বাস-মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ময়নুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘সিলেটের গণপরিবহন-পণ্যপরিবহন ও পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক শ্রমিকরা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমল থেকেই বিভিন্নভাবে বঞ্চিত ও অবহেলিত। আওয়ামী সরকারের মদদপুষ্ট একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেটের রোষানলে পড়ে অবর্ননীয় দুর্ভোগ নেমে আসে সিলেটের কোটি মানুষের ওপর। ২০১৮ সালে সিলেটের সব পাথর কোয়ারি বন্ধ করে দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, বর্তমানে লাখ লাখ কর্মহীন মানুষের কারণে এ অঞ্চলে দুর্ভিক্ষাবস্থা বিরাজ করছে। অন্য দিকে রিজার্ভের বিলিয়ন ডলার খরচ করে বিদেশ থেকে পাথর আমদানি করা হচ্ছে। তারা পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে বারবার আন্দোলন সংগ্রাম করে ফ্যাসিস্ট সরকারের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পরেও তারা জুলুম নির্যাতন ষড়যন্ত্র থেকে রেহাই পাননি। খবর ইউএনবির।
সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর ৩৬ ধারায় যে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে, তা মালিক শ্রমিককে ধ্বংসের নীল নকশা। একইভাবে গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট বেসরকারি প্রতিষ্টানকে দেওয়া আরেক হয়রানি ও ষড়যন্ত্র। তাছাড়া গাড়ি তল্লাশির নামের পুলিশ ট্রাক শ্রমিকদের প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে, যোগ করেন তিনি।
তাদের ৬ দফা দাবি হলো— সড়ক পরিবহন আইন ২-১৮ এর ৩৬ ধারায় সরকার বাস মিনিবাসের ক্ষেত্রে ২০, ট্রাক পিকআপ কাভার্ডভ্যানের ক্ষেত্রে ১৫ এবং সিএনজি-ইমা ও লেগুনার ক্ষেত্রে ১৫ বছর ইকোনোমিক লাইফ নির্ধারণ করার প্রজ্ঞাপন বাতিল, সিলেটের সব পাথর কোয়ারির ইজারা স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার ও সনাতন পদ্ধতিতে বালু মহাল ও পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, বিআরটিএ’র গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়ার ক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র বাতিল ও গণপরিবহনের ওপর আরোপিত বর্ধিত ট্যাক্স প্রত্যাহার, সিলেটের সব ক্রাশার মিলের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ বন্ধ, বিদ্যুতের মিটার ফেরত ও ভাঙচুর করা মিলের ক্ষতিপূরণ এবং গাড়ি থেকে নিয়ে যাওয়া পাথর-বালুর ক্ষতিপূরণ, সিলেটের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদকে প্রত্যাহার এবং বালু পাথরসহ পণ্যবাহী গাড়ির চালকদের হয়রানি না করা।
সংবাদ সম্মেলনে পরিবহনখাত সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, এই পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাখান করেছেন সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি লোকমান আহমদ। ধর্মঘট প্রত্যাখান করে বাস চলবে বলেও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, যারা শ্রমিকদের ব্যবহার করে পাথর কোয়ারির আন্দোলন করছেন, তারা পরিকল্পিতভাবে শ্রমিকদের প্রশাসনের মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছেন।