সাদা বলের ক্রিকেট লিটন দাসের পড়তি ফর্ম। ওয়ানডের পারফরম্যান্স দুঃস্বপ্নের মতো। টি-টোয়েন্টিতে ১৩ ইনিংস আগে সর্বশেষ ফিফটি। শ্রীলংকায় টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচেও ব্যর্থ। দ্বিতীয় ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন গেল কোচ সিমন্সের কাছে লিটনের সাম্প্রতিক ফর্ম নিয়ে। সিমন্স স্বীকার করেছেন, লিটনের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে। তবে আশার কথাও শুনিয়েছেন এভাবে, ‘আশা করছি পরের ম্যাচেই নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ সে রাখবে।’
কোচের ভরসার প্রতিদান লিটন দিলেন দু হাত ভরেই। নিজেও ছন্দ ফিরে পেয়েছেন, দলও ম্যাচ জিতে সিরিজে ফিরেছে ১-১ সমতায়। বাংলাদেশের ইনিংসের ৮ ছক্কার ৫টিই লিটন দাসের। ৫০ বলে ৭৬ রানের ইনিংসে হলেন ম্যাচ সেরা। ১৭৮ রানের লক্ষ্য দিয়ে শ্রীলংকাকে বাংলাদেশ গুটিয়ে দিয়েছে মাত্র ৯৪ রান। ডাম্বুলায় ম্যাচ জিতল নিজেদের ইতিহাসের রানের হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৩ রানের ব্যবধানে।
নিজের আর দলের এমন পারফরম্যান্সের পর লিটনের খানিকটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলার কথা। ম্যাচ প্রেজেন্টেশনে পুরস্কার নিতে গিয়েও কথা বললেন সেই সুরেই। নিজের ইনিংস নিয়ে লিটন বলেন, ‘শেষ কয়েকটা ম্যাচ ধরেই চেষ্টা করছিলাম ভালো ক্রিকেট খেলার। কিন্তু সেটা হয়ে উঠেনি। তবে নিজের ওপর বিশ্বাস আছে, যখনই সুযোগ পাব সেটা কাজে লাগাতে পারব।’
বাঁচা-মরার ম্যাচে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ রানের মধ্যেই ফেরেন দুই ওপেনার পারভেজ ইমন-তানজিদ তামিম। তাওহিদ হৃদয়ের সাথে ৬৯ রানের জুটিতে সেই চাপ সামলে ওঠেন লিটন। অবশ্য বিপদ আরো বাড়ে একই ওভারে হৃদয়ের সাথে মিরাজ ফিরে যাওয়াতে। কিন্ত শামীম হোসেনকে নিয়ে লিটন উল্টো চড়াও হন লংকান বোলারদের ওপর। পঞ্চম উইকেটে মাত্র ৩৯ বলে ৭৭ রান।
শামীম আউট হয়েছেন ২৭ বলে ৪৮ রানের ইনিংস খেলে। ৫ চার ও ২ ছক্কায় সাজানো শামীমের এই ইনিংসের গুরুত্ব কতখানি, সেটা বাংলাদেশের স্কোরকার্ডই বলে দিচ্ছে। এর সাথে ফিল্ডিংয়েও আজ ছিলেন দুর্দান্ত। কুশাল মেন্ডিসকে সরাসরি থ্রোতে রান আউট করে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিলেন শামীমই। পাওয়ারপ্লেতে দৌড়ে গিয়ে ধরেছেন আভিশকা ফার্নান্দোর দারুণ একটা ক্যাচও।
ম্যাচজুড়ে শামীমের এই পারফরম্যান্স নিয়ে লিটন বলেন, ‘চাপের মুখে শামীম যেভাবে ব্যাট করেছে পুরোটা ইনিংসে, তাতে কৃতিত্ব দিতেই হবে। আর ফর্মে থাকা কুশালকে করা রান আউটটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’
ডাম্বুলায় ম্যাচ জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতায় ফিরেছে বাংলাদেশ। আগামী ১৬ জুলাই কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টি।