ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় পাকিস্তানে ‘বেসামরিক নাগরিক’ নিহতের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ২৬ এবং আরও ৪৬ জন আহত হয়েছেন। পাক সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এ দিন দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন।
তবে ভারতের প্রভাবশালী নয়াদিল্লি টেলিভিশন (এনডিটি) দাবি করেছে, বুধবার রাতে ভারতের ওই হামলায় নিহত হয়েছে ৭০ জন।
এদিন দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে বেসামরিক নাগরিকদের দেওয়া হচ্ছে ‘যুদ্ধ মহড়ার’ প্রশিক্ষণ। মহড়ায় বিমান হামলাকে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ গুরুত্ব।
সুনির্দিষ্টভাবে কেবল নয়টি জঙ্গি আস্তানায় হামলার ভারত সরকারের দাবি অস্বীকার করে পাকিস্তান বলছে, যেসব স্থানে হামলা চালানো হয়েছে, সেগুলো আসলে বেসামরিক এলাকা। ইসলামাবাদের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের বাহাওয়ালপুর ও মুজাফফরাবাদ সংলগ্ন এলাকা সরেজমিন ঘুরিয়ে দেখানো হয়েছে।

গত মাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহেলগামে এক বন্দুক হামলায় ২৬ জন নিহতের জেরে ভারত সরকার পাকিস্তানে ওই হামলা চালাল। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তান-ভিত্তিক ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোকেই দায়ী করে আসছে। পাকিস্তান অবশ্য এসব অভিযোগ নাকচ করেছে এবং পাল্টা অভিযোগ করে বলেছে, ভারতই হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ প্রেক্ষাপটে বুধবার প্রতিবেশী দুইদেশ সরাসরি সংঘাতে জড়াল।
পাকিস্তানের জিও টিভি জানায়, লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে ভারতের হামলায় নিহতের ‘শহীদ’ বলে উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পাল্টা প্রতিরোধ হামলায় পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনী অন্তত পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান, একটি কমব্যাট ড্রোন ভূপাতিত করেছে। পাশাপাশি ধ্বংস করা হয়েছে ব্রিগেড সদর দফতরসহ একাধিক চেকপোস্ট। ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা পাঞ্জাব, আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের বিভিন্ন শহরে চালানো হয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
আইএসপিআর প্রধান জানান, সংঘর্ষে অংশ নেওয়া পাকিস্তান বিমানবাহিনীর সব জেট নিরাপদে ফিরে এসেছে। আর ধ্বংস হওয়া পাঁচ ভারতীয় যুদ্ধবিমানের মধ্যে রয়েছে তিনটি ফরাসি নির্মিত রাফায়েল, একটি সু-৩০ এমকেআই এবং একটি মিগ-২৯ ফুলক্রাম।
দুই দেশের নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর একাধিক ভারতীয় চৌকি ধ্বংস করা হয়েছে বলেও দাবি তার। তিনি বলেন, ‘সেখানে এখনও তীব্র গোলাগুলি চলছে এবং পাকিস্তান সেনাবাহিনী ভারতীয় সেনা অবস্থানগুলোর সঙ্গে সরাসরি সংঘর্ষ চালিয়ে যাচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্র দুই পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দেশকে আরও উত্তেজনা এড়াতে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘ এ ঘটনায় প্রকাশ করেছে গভীর উদ্বেগ। তাদের ভাষ্য, যুদ্ধ জাড়ালে তাই দুইদেশের জন্যই হবে ক্ষতিকর।