সম্প্রতি ভারতীয় কয়েকটি গণমাধ্যম ও সনাতনপন্থী প্রোপাগান্ডা পেজ ও অ্যাকাউন্ট দাবি করেছে , বাংলাদেশ সফরে আসা একটি ভারতীয় চিকিৎসক দলের সদস্যরা ঢাকায় হয়রানির শিকার হয়েছেন। তবে তদন্তে দেখা গেছে, এই দাবি পুরোপুরি মিথ্যা এবং এর সূত্রপাত একটি ‘জাল ফেসবুক অ্যাকাউন্ট’ থেকে।
জানা গেছে, ঘটনার সূত্রপাত ‘ডা. পূজা মুখার্জী’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে। এই অ্যাকাউন্টটি দাবি করে, এটি ভারতীয় মেডিকেল প্রতিনিধিদলের এক নারী সদস্যের। সেখানে পোস্ট করে বলা হয়, বাংলাদেশে সফরের সময় তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ মনে করা হয়েছে। বাংলাদেশি চিকিৎসকরা তাকে বোঝা হিসেবে দেখেছেন। এমনকি পানি কিনতে গিয়ে ৪০ টাকার পানির বোতলের জন্য ৩০০ টাকা দিতে হয়েছে। এই অভিযোগ দ্রুত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যম তা প্রচারও করে।
তবে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস পত্রিকার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতীয় মেডিকেল প্রতিনিধিদলে ছিলেন চারজন। তারা হলেন-দুজন বার্ন বিশেষজ্ঞ রাম মোহন (আরএমএল হাসপাতাল) ও পীযূষ থায়াল (সফদার জং হাসপাতাল), এবং দুজন নার্স পুনীত শর্মা ও অনিতা ভার্মা (দুজনই আরএমএল হাসপাতালের)। এদের মধ্যে পূজা মুখার্জী নামের কেউ নেই।
ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি গত বছরের এপ্রিল মাসে খোলা হয় এবং মাইলস্টোন ট্র্যাজেডির পর সক্রিয় হয়। অ্যাকাউন্টে ভারত ও বাংলাদেশের পতাকা, এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ছবি শেয়ার করে একটি বিশ্বাসযোগ্য পরিচিতি তৈরি করার চেষ্টা করা হয়।
একটি রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া গেছে , অ্যাকাউন্টটিতে ব্যবহৃত ছবিগুলো আসলেই জাল। প্রোফাইল ও ভাইরাল পোস্টে ব্যবহৃত ছবি দুটি ইনস্টাগ্রামের দুই ভিন্ন ব্যবহারকারীর কাছ থেকে চুরি করা হয়েছে, পায়েল দাস ও পূজা দাস। যেগুলো ২০২২ এবং ২০২১ সালের পুরোনো।
প্রেস উইং জানায়, পূজা মুখার্জী নামের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি ভুয়া। এটি সাজানো প্রচারণা, যার উদ্দেশ্য ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ভুল-বোঝাবুঝি সৃষ্টি করে কূটনৈতিক উত্তেজনা উসকে দেওয়া। ভারতীয় মেডিকেল দলের কোনো সদস্য এমন অভিযোগ করেননি।
বিবৃতিতে প্রেস উইং অভিযোগ করেছে, ‘এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচার’।