বিসিবির ‘ট্রিপল সেঞ্চুরি’তে ফিরছে অ্যাওয়ার্ড নাইট

টাইমস স্পোর্টস
3 Min Read
বোর্ড সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছে বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল (ডানে)। ছবি: টাইমস অফ বাংলাদেশ

দীর্ঘদিন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নতুন সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। তার সেই অভিজ্ঞতাই এবার কাজে লাগতে চলেছে বাংলাদেশের ক্রিকেটে। সোমবার বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের তৃতীয় সভা শেষে সভাপতি বুলবুল জানালেন বেশ কিছু নতুন উদ্যোগের কথা। যার বড় একটা অংশজুড়ে আছে ‘ট্রিপল সেঞ্চুরি’ নামক পরিকল্পনা। এর অধীনেই আবারও চালু হতে যাচ্ছে বিসিবি অ্যাওয়ার্ড নাইট। সর্বশেষ ২০০৬ সালে অ্যাওয়ার্ড নাইট আয়োজন করেছিল বিসিবি। 

সোমবার বিকেল তিনটায় শুরু হয় বিসিবি পরিচালকদের সভা। প্রায় ছয় ঘণ্টাব্যাপী সেই বৈঠকের পর রাত ৯টা ১৫ মিনিটে সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠুকে নিয়ে আসেন বুলবুল। সেখানেই তিনি জানান, ‘ট্রিপল সেঞ্চুরি’ পরিকল্পনার আদ্যোপান্ত।

এই প্রসঙ্গে বিসিবি সভাপতি বুলবুল বলেন, ‘ট্রিপল সেঞ্চুরির যে তিনটা কাজ; হান্ড্রেড পার্সেন্ট পারফরম্যান্স, হান্ড্রেড পার্সেন্ট ক্লাস এবং হান্ড্রেড পার্সেন্ট রিচ। মোট চারটা প্রোগ্রাম আছে, এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে বিসিবিকে কীভাবে আমরা বিশ্বমানের সংস্থা হিসেবে তৈরি করতে পারি। এজন্য নতুন অরগানোগ্রাম তৈরি করেছি। এই অরগানোগ্রামে আমাদের আগের রোলগুলো আছে, এর সাথে নতুন কিছু রোল যুক্ত হয়েছে। কীভাবে এই প্রোগ্রামটা চলবে সর্বসম্মতিক্রমে আমরা রাজি হয়েছি।’

এই ট্রিপল সেঞ্চু্রি প্রোগ্রামের অধীনে ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট সবার মনোবল বাড়াতে বিসিবি সভাপতি ঘোষণা দিলেন অ্যাওয়ার্ড নাইট চালুর। বুলবুল বলেন, ‘এটা আমাদের ট্রিপল সেঞ্চুরি প্রোগ্রামেরই একটা অংশ। হাই পারফরম্যান্স ফর অল প্রোগ্রামের অধীনে ক্রিকেটার ও ক্রিকেট সংশ্লিষ্ট যারা আছেন, তাদের মনোবল-আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির জন্য ক্রিকেট অ্যাওয়ার্ড নাইট করব। সেটা এক বছরের জন্য না, চার-পাঁচ বছর চালিয়ে রাখার জন্য পরিকল্পনা করব।’

ট্রিপল সেঞ্চুরি প্রোগ্রামের অধীনে কদিন আগে বিসিবি মিডিয়া প্লাজার সামনে উদযাপিত হয়েছে টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের রজতজয়ন্তী। এর মাধ্যমেই ক্রিকেটের বিকেন্দ্রীকরণ চালু হয়েছে জানিয়ে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান বুলবুল বলেন, ‘কানেক্ট এন্ড গ্রো প্রোগ্রামের আন্ডারে আমরা টেস্ট ক্রিকেটের ২৫ বছর পূর্তি পালন করলাম। এই উদযাপনের মাধ্যমে আমরা কানেক্ট এন্ড গ্রো প্রোগ্রাম নামটা ব্যবহার করে সাতটা বিভাগে ক্রিকেটের বিকেন্দ্রীকরণ শুরু করেছি। স্থানীয় প্রশাসন, ক্রীড়া সংস্থার সাথে কথা বলেছি, কীভাবে এই বিকেন্দ্রীকরণটা করতে পারি।

তৃণমূল থেকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ক্রিকেটের উন্নয়নের জন্য স্থানীয় কোচদের যুক্ত করার কথা জানিয়ে বুলবুল আরো বলেন, ‘জেলা পর্যায়ের যে কোচরা কীভাবে উপজেলা পর্যায়ে ক্রিকেটের উন্নয়ন করবেন, জেলা পর্যায়ের কোচরা কীভাবে বিভাগীয় কোচদের কাছে রিপোর্ট করবেন, বিভাগীয় কোচ কীভাবে ঢাকাকে রিপোর্ট করবেন সেসব নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’

বিসিবির বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের তৃতীয় সভায় আলোচনা হয়েছে মোট ৪০টি এজেন্ডা নিয়ে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নারী ও পুরুষ দলের নির্বাচক প্যানেলে নতুন সদস্য নিয়োগ, অ্যাথলেট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, টার্ফ ম্যানেজমেন্ট, কোচিং ও আম্পায়ার এডুকেশন উইং চালু।

এর সাথে পূর্বাচলের জাতীয় ক্রিকেট গ্রাউন্ডের দুই মাঠ ও ফতুল্লার শহীদ রিয়া গোপ স্টেডিয়ামের মূল ও আউটার গ্রাউন্ডের সংস্কার সম্পন্ন করে যত দ্রুত সম্ভব খেলার ব্যবস্থা করতে চায় বিসিবি। পূর্বাচলের দুই গ্রাউন্ডের মাঝে ক্রিকেটারদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধাসহ একটি হাই পারফরম্যান্স সেন্টার তৈরি করার কথাও জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি। এছাড়া বিপিএলের আগামী আসর ডিসেম্বর-জানুয়ারি মিলিয়ে মাঠে গড়ানোর সিদ্ধান্তও এসেছে বোর্ড সভায়। 

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *