কক্সবাজারের অন্যতম প্রধান নদী বাঁকখালীর অবৈধ দখল উচ্ছেদ কার্যক্রম ফের স্থানীয়দের বাধার মুখে পড়েছে। নুনিয়াছড়া ও নতুন বাহারছড়াবাসীর বিক্ষোভের মুখে উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিত করে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছে প্রশাসন।
শুক্রবার সকাল ১০টায় শহরের নুনিয়াছড়া এলাকায় পঞ্চম দিনের মতো উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। এ সময় উচ্ছেদের জন্য আনা এস্কেভেটর ভাঙচুর করে উত্তেজিত জনতা। সেইসঙ্গে সড়ক অবরোধ করে উচ্ছেদে নেতৃত্ব দেওয়া কর্মকর্তাদের দিকে তেড়েও আসেন বিক্ষুব্ধরা। কক্সবাজার শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে উচ্ছেদবিরোধী স্লোগান দেন তারা।
পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গেলে মূল সড়কে তাদেরও অবরুদ্ধ করে রাখে বিক্ষোভকারীরা।

প্রায় এক ঘন্টা পর কক্সবাজার সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল ও কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক মেয়র সরওয়ার কামাল ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। তাদের অনুরোধে উচ্ছেদ কার্যক্রম স্থগিত রাখার শর্তে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সড়ক অবরোধ তুলে নেয় আন্দোলনরতরা।
লুৎফুর রহমান কাজল বলেন, ‘কক্সবাজারবাসী আদালতের আদেশ মেনে চলেছেন, বরং আপনারাই (উচ্ছেদকারীরা) আদালতের আদেশ মানছেন না। আদালতের আদেশ অনুযায়ী, আগে নদীর জায়গা চিহ্নিত করুন, তারপর উচ্ছেদ করুন।’
‘আপনারা পাকিস্তানী হানাদারের মতো জনগণের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। ওদের কাগজপত্র দেখতে চাননি। ঢাকা থেকে নির্দেশ পেয়ে আপনাদের ইচ্ছা মতো ভাঙচুর করছেন’, যোগ করেন তিনি।
এসময় উত্তেজিত জনতাকে ঘরে ফেরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। এখন উচ্ছেদ হবে না। বিকালে জেলা প্রশাসনে বৈঠক হবে। সেখানে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে।’
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইলিয়াস খান জানান, বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে রাস্তা থেকে সরাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে। মূল সড়কে অবরোধ থাকায় কক্সবাজার বিমানবন্দর এলাকায় যান চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ায় যাত্রীদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
কক্সবাজার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিকালে জেলা প্রশাসনে বৈঠক হবে। আমরা সেখানেই সিদ্ধান্ত নেব যে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে।’