তাহলে কি টিকটক নিয়ে দ্বন্দ্ব পুরোপুরি মিটতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের? যুক্তরাষ্ট্রের প্ল্যাটফর্মে চীনের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্স নির্মিত টিকটক অ্যাপের মালিকানার বিষয়ে চুক্তি করতে সম্মতি দিয়েছেন ট্রাম্প। শুক্রবার এ বিষয়ক আলোচনা এগিয়ে নিতে শি জিনপিংকে ফোন করেন তিনি।
সাংবাদিকদের ট্রাম্প জানান, টিকটকের মালিকানার বিষয়ে এখন শুধু একটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি সই বাকি আছে। শিগগিরই দুই দেশ এ বিষয়ে প্রক্রিয়া শুরু করবে। তারপরও যুক্তরাষ্ট্র টিকটকের ওপর ‘খুবই কঠোর নিয়ন্ত্রণ’ রাখবে বলেও হুঁশিয়ার করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে লেখেন, ‘ফোনালাপ বেশ “ফলপ্রসূ” ছিল। চুক্তির বিষয়ে অগ্রগতির জন্য আমি শির প্রতি কৃতজ্ঞ।’
পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি এবং শি দুই দেশের বাণিজ্য ইস্যু নিয়ে আলোচনায়ও বেশ ‘অগ্রগতি’ করেছেন। আগামী মাসের শেষে দক্ষিণ কোরিয়ায় আসন্ন এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনে সাক্ষাৎ করবেন তারা।
এরপর আগামী বছরের শুরুতে চীন সফর করবেন জানিয়ে তিনি বলেন, শি-ও ‘উপযুক্ত সময়ে’ যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন।
বিবিসি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, চুক্তি অনুযায়ী, ছোট ছোট ভিডিও তৈরির জনপ্রিয় অ্রাপ টিকটকের মার্কিন ব্যবসা যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন কোনো বিনিয়োগকারীর কাছে বিক্রি করা হবে। চীনের সরকারি সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া অবশ্য ট্রাম্প-শি আলোচনার বিষয়টি ধোঁয়াশায় রেখেছে। তাদের খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের টিকটক নিয়ে আলোচনাকে স্বাগত জানিয়েছেন শি।
সিনহুয়া জানিয়েছে, টিকটক ইস্যুতে চীনের অবস্থান ‘খুবই পরিষ্কার’। শি জিনপিংয়ের প্রশাসন হোয়াইট হাউসকে জানিয়েছে, বাজারনীতির ভিত্তিতে বাণিজ্যিক আলোচনার মাধ্যমে এমন সমাধানে পৌঁছাতে হবে, যা চীনের আইনকানুনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সে দেশের স্বার্থ রক্ষা করে।
শি জিনপিংয়ের কার্যালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘আমরা আশা করি, যুক্তরাষ্ট্র চীনা কোম্পানিগুলোর জন্য উন্মুক্ত, ন্যায্য ও বৈষম্যহীন ব্যবসায়িক পরিবেশ নিশ্চিত করবে।’
শুক্রবার টিকটকের চীনা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাইটড্যান্স চীনের প্রযোজ্য আইন অনুসারে কাজ করবে যেন টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবহারকারীদের জন্য চালু থাকে।’ জনপ্রিয় অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে টিকিয়ে রাখতে প্রচেষ্টার জন্য শি এবং ট্রাম্পকে ধন্যবাদও জানায় টিকটক কর্তৃপক্ষ।
বাইটড্যান্সকে কয়েক বছর আগেই হুঁশিয়ার করে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম চালাতে হলে টিকটকের মালিকানা কোনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানের কাছে তাদের বিক্রি করতে হবে। না হলে অ্যাপটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এ নিয়ে টিকটক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় গত জানুয়ারিতে জনপ্রিয় অ্যাপটিতে প্রথমবারের মতো নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে তার একদিন পরেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বাইটড্যান্সের সঙ্গে আলোচনা এগিয়ে নিতে আগ্রহ দেখান ট্রাম্প।