যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ফরদো, নাটাঞ্জ ও ইসফাহানে পারমাণবিক স্থাপনায় ‘অত্যন্ত সফল’ হামলা চালিয়েছে বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি পাল্টা হামলার বিষয়ে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘মনে রাখবেন, এখনও অনেক লক্ষ্য বাকি রয়েছে।’
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, এই হামলাকে ‘নিন্দনীয়’ আখ্যা দিয়ে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘এটি দেশের “শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনার” ওপর বর্বর আগ্রাসন, যার “স্থায়ী পরিণতি” হবে।
তবে আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, এই হামলার পর পার্শ্ববর্তী এলাকায় তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তকে ‘সাহসী’ বলে প্রশংসা করেন এবং জানান, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণ সমন্বয়ের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করেছে।
ইরান জানায়, ১৩ জুন ইসরায়েল হামলা শুরুর পর থেকে দেশটিতে ৪০০ জনের বেশি নিহত ও ৩ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে অন্তত ২৪ জন নিহত হন।
এদিকে ইরানের পারমাণবিক নিরাপত্তা কেন্দ্রের প্রধান রেজা কারদান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের আজকের হামলার পরও আক্রান্ত স্থাপনাগুলোর বাইরে কোনো তেজস্ক্রিয়তা ছড়ায়নি। জনগণের স্বাস্থ্যের বিষয়ে পূর্বপ্রস্তুতির কারণে আশেপাশের এলাকায় বসবাস করা নিরাপদ।’
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, ইরানে তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলা ‘সফলভাবে সম্পন্ন’ হয়েছে।
সমাজ মাধ্যম ট্রুথ স্যোশালে পোস্ট করা এক বার্তায় তিনি এ কথা বলেন। হোয়াইট হাউসের অফিসিয়াল এক্স আইডি থেকে ট্রাম্পের পোস্টটি শেয়ার করা হয়েছে।
ট্রাম্প জানান, ইরানের ফোরদো, নাতান্জ এবং এসফাহানে অবস্থিত পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে বোমা বর্ষণ করা হয়েছে।
তিনি লেখেন, ‘আমরা আমাদের অত্যন্ত সফল হামলা শেষ করেছি। ফোরদো ছিল মূল টার্গেট, যেখানে পুরোপুরি বোমা বর্ষণ করা হয়েছে। সব বিমান এখন ইরানি আকাশসীমার বাইরে এবং নিরাপদে দেশে ফিরছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের “মহান মার্কিন যোদ্ধাদের অভিনন্দন”। এমন অভিযান পৃথিবীর আর কোনো সেনাবাহিনী পরিচালনা করতে পারতো না। এখন শান্তির সময়।’
ট্রাম্পের এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উত্তেজনা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
তবে হামলার পর তিনি “শান্তির সময়” বললেও, মধ্যপ্রাচ্যে এই পদক্ষেপের পরিণতি কী হতে পারে তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে।