শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন। ২০২৫ সালের জুনে বাংলাদেশের বিপক্ষে গলে অনুষ্ঠিতব্য প্রথম টেস্টটি হবে তার ১৫ বছরের টেস্ট ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ।
ম্যাথিউস এক আবেগঘন বার্তায় লিখেছেন, “এই পথচলা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সম্মান। আমি ক্রিকেটকে সব দিয়েছি, আর ক্রিকেটও আমাকে ফিরিয়ে দিয়েছে অনেক কিছু। টেস্ট ফরম্যাটকে বিদায় বলছি, তবে দেশের প্রয়োজনে সাদা বলের ক্রিকেটে প্রস্তুত থাকব।”
২০০৯ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেকের পর থেকে ম্যাথিউস খেলেছেন ১১৯টি টেস্ট, করেছেন ৮১৬৭ রান। গড় ৪৪.৬২, ১৬টি সেঞ্চুরি—শ্রীলঙ্কার টেস্ট ইতিহাসে রানসংখ্যায় তার ওপরে আছেন কেবল সাঙ্গাকারা ও জয়বর্ধনে। মাঝে ইনজুরির কারণে বোলিং কমিয়ে আনলেও ব্যাট হাতে তিনি ছিলেন দলের নির্ভরতার প্রতীক। বল হাতেও নিয়েছেন ৩৩টি উইকেট।
২০১৪ সালে হেডিংলেতে তার ১৬০ রানের ইনিংসটি শ্রীলঙ্কার ইতিহাসে অন্যতম সেরা বিদেশজয়ের ভিত গড়েছিল। ২০১৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত সময়টা ছিল তার ক্যারিয়ারের স্বর্ণালী অধ্যায়—এই সময়েই তিনি প্রায় ৬০ গড়ে ২৩৭৮ রান করেন। পরের দিকেও ২০২২ ও ২০২৩ সালে চার নম্বরে ব্যাট করে আবারও নিজেকে প্রমাণ করেছেন।
তবে এই বিদায়ের পেছনে একটি বাস্তব কারণও আছে—বাংলাদেশ সিরিজের পর শ্রীলঙ্কার আর কোনো টেস্ট ম্যাচ নেই অন্তত ২০২৬ সালের মে মাস পর্যন্ত। এই দীর্ঘ বিরতির মাঝেই সিদ্ধান্তটা নিয়ে ফেললেন ম্যাথিউস।
ক্যারিয়ারের একটি সময় কিছু বিতর্কও ছিল—বিশেষ করে কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সঙ্গে টানাপোড়েনের সময়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ফিটনেসে মনোযোগ দিয়ে এবং পেশাদার মনোভাব বজায় রেখে তিনি নিজেকে আবারও প্রতিষ্ঠিত করেন।
হোয়াইট বল ক্রিকেটে এখনও সুযোগ থাকলেও, এখনো দলে নিয়মিত নন। তবে ২০২৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে, যেটা শ্রীলঙ্কা ও ভারত যৌথভাবে আয়োজন করবে, সেখানে ফেরার ইচ্ছা এখনও শেষ হয়ে যায়নি।
গল—যেখানে তিনি বহু স্মরণীয় ইনিংস খেলেছেন—সেই মাঠেই এবার তাকে শেষবারের মতো দেখা যাবে সাদা জার্সিতে। সাঙ্গাকারা-জয়বর্ধনের পরবর্তী যুগে শ্রীলঙ্কা টেস্ট দলের সবচেয়ে স্থিতিশীল কণ্ঠস্বর ছিলেন তিনি। তার এই বিদায়ে সেই একটি অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটবে—নীরব, কিন্তু গভীরভাবে মূল্যবান।