সমুদ্র পথে মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার গহীন পাহাড়ে ‘বন্দী’ করে রাখা নারী ও শিশুসহ ৬৬ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড যৌথ অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করে। তবে, এ সময় পাচারকারি কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
শুক্রবার দুপুরে কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত টেকনাফের উপকূলীয় ইউনিয়ন টেকনাফের পাহাড়ের চূড়ায় এ অভিযান চালানো হয়। এ সময় বন্দিদশা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় কয়েকটি সংঘবদ্ধ পাচারকারী চক্র বিদেশে উচ্চ বেতনের চাকরি, সুবিধাজনক কর্মসংস্থান, উন্নত জীবনযাপনের স্বপ্ন, অল্প খরচে বিদেশ যাত্রা এবং বিনা খরচে পাঠানোর পর কর্মস্থলে কাজের মাধ্যমে খরচ পরিশোধের সুযোগের প্রলোভন দেখিয়ে টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাংলাদেশি ও রোহিঙ্গা নাগরিকদের মালয়েশিয়ায় পাঠাতে উদ্বুদ্ধ করে।
পরে তাদের টেকনাফের গহীন পাহাড়ে এনে গোপন আস্তানায় জিম্মি করে রাখে। পরবর্তীতে পাচারকারীরা তাদের সুবিধাজনক সময়ে টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন উপকূল থেকে ট্রলারে করে মালয়েশিয়ায় পাচার করার পরিকল্পনা করেছিল। এমনকি পাচারকারীরা তাদের আটকে রেখে নির্যাতনের মাধ্যমে মুক্তিপণ আদায় করারও চেষ্টা করে।
পাচারকারী দলের সদস্যদের চিহ্নিত করে আটকের চেষ্টা চলছে। উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় যাচাই-বাছাই করে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় টেকনাফ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
তবে অভিযান শুরু হলে যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি বুঝতে পেরে পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম। তিনি বলেন, তাদের আটক করতে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের গোয়েন্দা নজরদারি ও অভিযান চলছে।
চলতি বছরে এখন পর্যন্ত টেকনাফে ৬২ জন মানব পাচারকারীকে গ্রেপ্তার এবং ৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।