টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ঝিনাইদহে বাড়ছে সাপের উপদ্রব। জেলার ছয়টি উপজেলার মধ্যে শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ডুতে প্রতিদিনই একাধিক সাপে কাটা রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন।
শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী, গত দুই সপ্তাহে এখানে রেকর্ড সংখ্যক রোগী চিকিৎসা নিতে এসেছেন। তবে সরকারি পর্যায়ে এন্টিভেনমের সংকট রয়েছে। জেলা সদর হাসপাতাল ও শৈলকুপায় কিছু মজুত থাকলেও, অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে তা নেই। ফলে অধিকাংশ রোগীকেই নিজের খরচে এন্টিভেনম কিনতে হচ্ছে।
জেলার কোটচাঁদপুর উপজেলার বলুহর মাঠপাড়ায় মাহতাব উদ্দিনের স্ত্রী নাসিমা বেগম (৪৫) গত ৩০ জুলাই সাপে কাটা পড়ে মারা যান। এর আগে ১২ জুলাই শৈলকুপার ব্রহ্মপুর গ্রামে সাপের কামড়ে মারা যান অপু বিশ্বাস নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী। স্থানীয়রা বলছেন, সরকারি এন্টিভেনম সরবরাহ বন্ধ এবং সচেতনতার অভাবে অনেকেই হাসপাতালে পৌঁছাতে দেরি করছেন। আবার কেউ কেউ এখনও ঝাড়ফুঁকের আশ্রয় নিচ্ছেন। এতে প্রাণহানির ঘটনা বাড়ছে।
শৈলকুপার স্থানীয় সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান মুসা বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে এন্টিভেনম না থাকায় দরিদ্র মানুষের পক্ষে তা কেনা কঠিন। ফলে অনেকে চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রাশেদ আল মামুন জানান, প্রতিদিনই দু-একজন রোগী হাসপাতালে আসছেন। এখানকার এটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সহযোগিতায় কিছু এন্টিভেনম মজুত রয়েছে, যার মধ্যে বর্তমানে ৭০ ভায়েল আছে। তবে এটি সাময়িক সমাধান মাত্র। তিনি সাপ দূর করতে ঘরে কার্বলিক অ্যাসিড ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।
ঝিনাইদহ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সরকারের এন্টিভেনম প্রকল্পটি গত অর্থবছরে বন্ধ হয়ে গেছে। জুন মাসে মাত্র ৩০ ভায়েল পেয়েছিলাম, যা মাত্র তিনজনকে দেওয়া সম্ভব। হাসপাতালের নিজস্ব অর্থে আরও ৪০ ভায়েল কিনেছিলাম, তাও শেষ হয়ে গেছে।’
তিনি জানান, এন্টিভেনমের ১০ ভায়েলের দাম পড়ে ১২ হাজার ৬০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। সরকারি বরাদ্দ না বাড়ালে রোগীদের পক্ষে এই ব্যয় বহন করা দুষ্কর।