পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠার কারণে গাজায় ‘দুর্ভিক্ষের’ ঘোষণা দিল জাতিসংঘ। সংস্থার পক্ষ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে এই প্রথম এই ধরনের ঘোষণা এল। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সেখানে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষ খাদ্য সংকটে পড়েছে।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার শুক্রবার এক বিবৃতিতে গাজার দুর্ভিক্ষকে ‘সম্পূর্ণ প্রতিরোধযোগ্য’ বলে উল্লেখ করেন। তার অভিযোগ, ‘ইসরায়েলের কারণে গাজায় খাদ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এই খাদ্য সরবরাহে “পদ্ধতিগতভাবে” বাধা দেওয়া হচ্ছে।’
তবে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে ওই বক্তব্য প্রত্যাখান করেছে। তারা পাল্টা বিবৃতিতে দাবি করেছে, ‘গাজায় কোনো দুর্ভিক্ষ নেই।’ রোম ভিত্তিক ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) উদ্যোগের প্রতিবেদনকে ‘হামাসের মিথ্যা প্রচার’ হিসেবেও তারা অভিহিত করেছে।
জাতিসংঘের সংস্থাগুলি গাজায় মানবিক পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হওয়ার বিষয়ে কয়েক মাস ধরে সতর্ক করে আসছিল।
আইপিসি নিশ্চিত করেছে যে, ১৫ আগস্ট থেকে দুর্ভিক্ষের (আইপিসি ফেজ ৫) সম্মুখীন হচ্ছেন গাজাবাসী। সেপ্টেম্বর মাসের শেষে, এই দুর্ভিক্ষ ডেইর এল-বালাহ এবং খান ইউনিসে ছড়িয়ে পড়তে পারে, যা গাজার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ অঞ্চলকে প্রভাবিত করবে।
জাতিসংঘের ফ্লেচার বলেছেন, ‘এটি এমন এক দুর্ভিক্ষ যার বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে সোচ্চার হওয়া উচিত। এই দুর্ভিক্ষ আমরা প্রতিরোধ করতে পারতাম, অথচ সীমান্তে খাদ্য জমে আছে; ইসরায়েল বাধায় তা আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছানো যাচ্ছে না।’
আইপিসি আরও জানিয়েছে যে, গাজার স্থানীয় খাদ্য ব্যবস্থার প্রায় পুরোপুরি বিপর্যয় ঘটেছে। সেখানে প্রায় ৯৮ শতাংশ জমি ক্ষতিগ্রস্ত, পশুপালন ধ্বংস হয়ে গেছে এবং মাছ ধরাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া গাজাবাসীর স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও চরম অবনতির মধ্যে রয়েছে। সেখানে নিরাপদ পানির সরবরাহ ভেস্তে গেছে, স্বাস্থ্যবিধিও মারাত্নকভাবে হ্রাস পেয়েছে।