কর্মীদের ন্যায়-নীতি মেনে চলার আহ্বান বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের   

টাইমস রিপোর্ট
4 Min Read
আবদুস সালাম তালুকদারের স্মরণসভায় বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। ছবি: টাইমস

দেশ ও দলের জন্য ইতিবাচক রাজনীতি করতে চাইলে সবার আগে নেতাকর্মীদের নিজেদের ব্যক্তিজীবন ঠিক করতে হবে বলে মনে করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা। তারা বলছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিদিন যে দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন সেগুলো মেনে চললে নেতাকর্মীদের ব্যক্তি ইমেজ ভালো হবে।

মঙ্গলবার ঢাকার কাকরাইলে আয়োজিত এক স্মরণসভায় নিজেদের বক্তব্যে ঘুরেফিরে এসব কথাই বললেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান।

দলের সাবেক মহাসচিব আবদুস সালাম তালুকদারের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তাকে স্মরণ করার পাশাপাশি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিভিন্ন পরামর্শ দেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। আবদুস সালাম তালুকদারের রাজনৈতিক জীবন ও দর্শন থেকেও শিক্ষা নিতে বলেন তারা।

কাকরাইলের ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে এই সভার আয়োজন করেছিল ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম স্মৃতি সংসদ।

আবদুল মঈন খান বলেন, ‘যা করা উচিত না, তা করবেন নান্যায়-নীতি মেনে চলতে হবে। সঠিক পথে থাকার চেষ্টা করবেন সবাই।’

গত ১৫ বছর বিএনপি যে রাজনৈতিক আন্দোলন করেছে তার চূড়ান্ত ফলাফল ছাত্রজনতার আন্দোলনের মাধ্যমে এসেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আশির দশকেও একটি সামরিক শাসকের বিরুদ্ধে বিএনপি আন্দোলন করেছে। সেসময় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে অনবদ্য ভূমিকা রেখেছেন দলের মহাসচিব আব্দুস সালাম তালুকদার। সেই অগ্নিগর্ভ সময়ে সবসময় বেগম খালেদা জিয়ার পাশে ছিলেন তিনি।’

‘আমি অনেকের সংস্পর্শে এসেছি কিন্তু সালাম তালুকদার ছিলেন একজন ব্যতিক্রমী ব্যক্তি। বিএনপি তার মতো একজন ব্যক্তিকে মহাসচিব হিসেবে পেয়েছিল, আমি মনে করি এটা বিএনপির জন্য একটি চমৎকার বিষয়।’

নেতাকর্মীরা যদি ব্যক্তি ইমেজ ভালো রাখেন তাহলে সামষ্টিকভাবে দলের ভাবমূর্তিও ভালো হয় বলে মনে করেন নজরুল ইসলাম খান।

সাবেক মহাসচিবের স্মৃতিচারণ করে বর্ষীয়ান এই নেতা বলেন, ‘আব্দুস সালাম তালুকদারের মতো আদর্শিক মানুষের সঙ্গে কাজ করা ছিল সৌভাগ্যের বিষয়। উনি যখন মন্ত্রী ছিলেন, তখনও খুব সাদামাটা জীবনযাপন করেছেন। মেঝেতে বসেও নেতাকর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করতেন তিনি। নেতাকর্মীদের উচিত এরকম নেতাদের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি করা।’

ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘আমি যখন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, সালাম তালুকদার তখন বিএনপির মহাসচিব। ডাকসু নির্বাচনে যেন আমরা অংশ না নেই, এজন্য হামলা হয় আমাদের ওপর। তখন সালাম তালুকদার আমাদের দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন। আমাদের রাজনীতি শিখিয়েছেন তিনি।’

ডাকসুর ভিপি থাকা অবস্থায় ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে মোস্তফা মহসীন মন্টুর মতো প্রভাবশালী নেতাকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পেছনে সালাম তালুকদারের অবদান আছে বলেও জানান তিনি।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, ‘নব্বইয়ের গণ অভ্যুত্থানে এরশাদের পতন এবং নির্বাচনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপির সরকার গঠন করা, সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করা, আবদুস সালাম তালুকদারের ভূমিকা অনেক। আমরা তার কাছ থেকে ছাত্র রাজনীতি শিখেই আজ জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতি করছি।’

স্মরণসভায় কথা বলেন আব্দুস সালাম তালুকদারের মেয়ে সালিমা বেগম আদুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা যেন দেশকে ভালোবাসি। টাকার কাছে যেন কেউ বিক্রি না হই। অন্যায়ের সঙ্গে আমরা যেন কখনো আপোষ না করি।’

আব্দুস সালাম তালুকদারের মতো তার মেয়েও যেন দেশ ও মানুষের পাশে থাকতে পারেন, সেজন্য সবার দোয়া চান তার স্ত্রী মাহমুদা সালাম তালুকদার।

এসময় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব এএসএম আব্দুল হালিম, বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সাবেক সংসদ সদস্য নিলোফার চৌধুরী মনিসহ অন্যরা।

Share This Article
Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *