আইসিসি এপ্রিল মাসের সেরা পুরুষ ক্রিকেটার হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বাংলাদেশের এই নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডার নিজের ব্যাটিং-বোলিং নৈপুণ্যে টেস্ট সিরিজে দাপট দেখিয়েছিলেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। এবার মিলেছে তার স্বীকৃতিও — জীবনের প্রথম ‘আইসিসি প্লেয়ার অব দ্য মান্থ’ পুরস্কার।
এই পুরস্কারের দৌঁড়ে ছিলেন আরও দুই পেসার — জিম্বাবুয়ের ব্লেসিং মুজারাবানি ও নিউজিল্যান্ডের বেন সিয়ার্স। তবে তাদের ছাপিয়ে মিরাজ ছিলেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এর আগে বাংলাদেশের হয়ে কেবল মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান এই পুরস্কার পেয়েছেন। মিরাজ হলেন তৃতীয় টাইগার যিনি আইসিসি-র এই সম্মাননা পেলেন।
পুরস্কার পাওয়ার পর মিরাজ বলেন, “আইসিসির পুরস্কার পাওয়া যে কোনও ক্রিকেটারের জন্য দারুণ গর্বের। বিশ্বজুড়ে ক্রিকেটপ্রেমীরা আমাকে ভোট দিয়ে সম্মানিত করেছেন, এটা সত্যিই বিশেষ কিছু।”
এই স্বীকৃতি যেন তাকে ফিরিয়ে নিয়েছে শুরুর দিনে। “২০১৬ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ার অনুভূতির মতোই আজকের এই পুরস্কারটাও হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। তখন যেমন ছিল অনুপ্রেরণা, এখনো তাই। আমি সতীর্থ, কোচিং স্টাফ আর ভক্তদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। এটা আমাদের সবার প্রাপ্তি।”
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে মিরাজ যেন ছিলেন একক নাটকের নায়ক। ব্যাটে-বলে সমান দক্ষতায় জ্বলে ওঠেন। পুরো সিরিজে ৩৮.৬৬ গড়ে করেন ১১৬ রান, আর উইকেট নেন ১৫টি — গড় মাত্র ১১.৮৬।
সিলেট টেস্টে বল হাতে দুই ইনিংসেই পাঁচ উইকেট নেন — ৫/৫২ ও ৫/৫০। যদিও ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত তিন উইকেটে জিতে নেয় জিম্বাবুয়ে। চট্টগ্রামে দ্বিতীয় টেস্টে দৃশ্যপটই বদলে ফেলেন মিরাজ। প্রথম ইনিংসে ১৬২ বলে করেন দুর্দান্ত সেঞ্চুরি (১০৪ রান), এরপর বল হাতে ফের মারাত্মক — ৫/৩২। বাংলাদেশ ইনিংস ও ১০৬ রানে জেতে সেই ম্যাচ, আর সিরিজ সমতায় শেষ হয়।
জাতীয় দলের এই সাফল্যের পেছনে যেমন মিরাজের একার কৃতিত্ব রয়েছে, তেমনি আছে তার নিরন্তর পরিশ্রম। এই পুরস্কার যে কেবল ব্যক্তিগত সম্মান নয়, বরং বাংলাদেশের ক্রিকেট এগিয়ে চলার পথেও এটি এক উজ্জ্বল অধ্যায়।