ঈদ আনন্দে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে দেশীয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলো নানান কন্টেন্টের পসরা সাজিয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে অভিনেত্রী রুনা খানের নতুন তিনটি কাজ। এগুলো হলো– ওয়েব সিরিজ ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’, ‘পাপকাহিনী’ ও ওয়েব ফিল্ম ‘নীলপদ্ম’। এগুলোতে তিন রকম চরিত্রে দর্শকদের সামনে হাজির হয়েছেন তিনি। ফলে এবারের ঈদে ওটিটিতে বলা যায় হ্যাটট্রিক করলেন এই তারকা!
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম হইচইয়ে গত ৫ জুন মুক্তি পেয়েছে অমিতাভ রেজা চৌধুরী পরিচালিত সাত পর্বের ওয়েব সিরিজ ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’। এতে অনাথ ট্রাকচালক আব্বাস চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। ট্রাক চালানোর পেশায় থাকার কারণে দেশের আটটি ভিন্ন শহরে আটটি আলাদা জীবন গড়ার সুযোগ পায় সে। প্রতিটি শহরে তার একেকজন স্ত্রী, যারা প্রত্যেকে নিজেকে আব্বাসের একমাত্র সহধর্মিণী মনে করে! আব্বাসের ছয় নম্বর স্ত্রী আম্বিয়া চরিত্রে অভিনয় করেছেন রুনা খান।

কমেডি ধাঁচের এই সিরিজে আব্বাসের অন্য বউদের ভূমিকায় আছেন তানজিকা আমিন, মৌসুমী হামিদ, সাদিয়া আয়মান, ফারহানা হামিদ, রোবেনা রেজা জুঁই, নতুন দুই মুখ আসমা উল হুসনা বৃষ্টি ও সারাহ জেবিন অদিতি। এছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাকিব হোসেন ইভন, অশোক বেপারি, পঙ্কজ মজুমদার, সুমন পাটোয়ারি, সায়্যেদা। সিরিজটির দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭৮ মিনিট।
রুনা খান জানান, ‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’ কমেডি, রহস্য ও মানবিক গল্পের এক মিশ্রণ। এতে কমেডির আবরণে ব্যাঙ্গাত্মকরূপে সমাজ-রাজনীতি প্রতিফলিত হয়েছে। সেই সঙ্গে বিনোদনের মোড়কে বিভিন্ন ধারার বিশ্বাস ও আধুনিক চিন্তার সহাবস্থান ফুটে ওঠেছে। সিরিজের মুখ্য চরিত্র আব্বাসের প্রত্যেক স্ত্রী দেশের একেকটি ‘রঙ’-এর প্রতিনিধিত্ব করেছে। তাদের আলাদা ব্যক্তিত্ব, পটভূমি ও আদর্শের মাধ্যমে এই কন্টেন্ট বহুমাত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক এক বর্ণময় কাহিনি হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

রুনা খান বলেন, ‘আব্বাসের পথচলার মধ্য দিয়ে দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের ভ্রমণ দেখানো হয়েছে। সেই সঙ্গে উত্তরের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শুরু করে দক্ষিণের ব্যস্ত শহর পর্যন্ত দেশের বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি উঠে এসেছে গল্পে। “বোহেমিয়ান ঘোড়া” শুধু একাধিক বিয়ের হাস্যরসাত্মক গল্প নয়, এটি দেশের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের এক প্রতিচ্ছবি— যেখানে প্রত্যন্ত গ্রামেও আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে আর মানুষ হাসি, দৃঢ়তা ও এক গভীর সামাজিক সংবেদনশীলতা দিয়ে দ্বন্দ্বে ভরা জীবনের পথ খুঁজে নেয়।’
‘বোহেমিয়ান ঘোড়া’র চিত্রনাট্য লিখেছেন মো. আলম ভূঁইয়া, বিধান চন্দ্র দাস ও অমিতাভ রেজা চৌধুরী। প্রযোজক হিসেবে কাজ করেছেন মাহজাবিন রেজা চৌধুরী ও মো. আসাদ্দুজামান সকাল। চিত্রগ্রহণে কামরুল হাসান খসরু। পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন ইদিলা ফরিদ তুরিন। শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন শহিদুল ইসলাম। আবহসংগীত ও গান তৈরি করেছেন জাহিদ নীরব। এতে ‘আতা লতা’ ও ‘নেশা নেশা’ শিরোনামে দুটি গান রয়েছে।

এদিকে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আইস্ক্রিনে মুক্তি পেয়েছে রুনা খান অভিনীত ‘পাপকাহিনী’। তিন পর্বের সিরিজটি পরিচালনা করেছেন অভিনেতা-উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়। স্বামী-স্ত্রীর প্রেম, বিশ্বাস ও প্রতিশোধের গল্প রয়েছে এতে। ‘পাপকাহিনি’তে রুনা খানের চরিত্রের নাম রূপা। তার স্বামী মফিজের ভূমিকায় আছেন জয়।
আইস্ক্রিনেই ঈদ উপলক্ষে মুক্তি পেয়েছে রুনা খানের নতুন ওয়েব ফিল্ম ‘নীলপদ্ম’। এতে যৌনকর্মীদের জীবন, সামাজিক অবস্থা ও সংগ্রাম তুলে ধরা হয়েছে। রুনা খান যৌনকর্মী নীলা চরিত্রে অভিনয় করেছেন ফিল্মটিতে। গত বছরের জানুয়ারিতে এর শুটিং করতে প্রথমবার রাজবাড়ী জেলার দৌলতদিয়ায় যান রুনা খান। টানা তিন দিন সেখানে ছিলেন তিনি।

‘নীলপদ্ম’তে আরও অভিনয় করেছেন রাশেদ মামুন অপু, এ কে আজাদ সেতু, শাহেদ আলী, রোকেয়া প্রাচী, সুজাত শিমুল। ‘নীলপদ্ম’র মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন তৌফিক-ই-এলাহি। প্রযোজনা, গল্প, সংলাপ ও চিত্রনাট্য তারই। চিত্রগ্রহণে নাহিয়ান বেলাল। আবহ সংগীত তৈরি করেছেন সৈয়দ নাফিস। ২৩তম ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশ প্যানারোমা বিভাগে নির্বাচিত হয় ‘নীলপদ্ম’। ছবিটি নিবেদন করেছে জাইন কমিউনিকেশন্স।