হাতি সংরক্ষণের জন্য সরকার বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এই প্রকল্পের আওতায় প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ফিরিয়ে আনা ও হাতির অভয়াশ্রম নির্মাণসহ বেশ কিছু উদ্যোগের কথা বলেছেন তিনি।
বুধবার আগারগাঁওয়ের বন ভবনে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব তথ্য জানান উপদেষ্টা। বিশ্ব হাতি দিবস ২০২৫ উপলক্ষে বন অধিদপ্তরের উদ্যোগে এই সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘সরকার ৩৫০ হেক্টর জমিতে হাতির খাদ্যোপযোগী গাছের বাগান ও ৫০ হেক্টর বাঁশবাগান তৈরি করবে। হাতির চলাচল পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে ১৬টি টাওয়ার নির্মাণ করা হবে।
এ ছাড়া ‘ক্যাপটিভ’ হাতি উদ্ধার করে তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য গাজীপুর সাফারি পার্ক ও ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে হাতি উদ্ধার কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, পোষা হাতিদের পুনর্বাসনের জন্য চট্টগ্রামের চুনতিতে দশ একর জায়গাজুড়ে একটি অভয়ারণ্য তৈরি করা হবে। আহত হাতিদের চিকিৎসার জন্য সিলেট, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি ও শেরপুর অঞ্চলে নির্মিত হবে অস্থায়ী সেড।
এ ছাড়া মানুষের সঙ্গে হাতির সংঘর্ষ প্রতিরোধের জন্য লেবু, বেত ও বড়ইসহ কাঁটাজাতীয় উদ্ভিদ দিয়ে বনাঞ্চলে ১০ কিলোমিটার ‘বায়োফেন্সিং’ সীমানা নির্মাণের কথাও জানান রিজওয়ানা হাসান।
যারা হাতি পালন করেন, তাদের কীসের ভিত্তিতে হাতি পালনের লাইসেন্স দেওয়া হয়, সেই প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, ‘হাতি পালন খুবই ব্যয়বহুল। তা ছাড়া একটা হাতিকে প্রতিদিন ৩৫ কিলোমিটার রাস্তা হাঁটতে হয়। যারা হাতি পালন করেন, তাদের কী ৩৫ কিলোমিটার জমির মালিকানা আছে?’
এ সময় হাতি দিয়ে রাস্তায় চাঁদা তোলা এবং হাতির খেলা দেখিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা বন্ধ করার আহ্বান জানান রিজওয়ানা হাসান।
হাতি সংরক্ষণের জন্য জরিপের মাধ্যমে হাতির সঠিক সংখ্যা নির্ধারণ, হাতির চলাচলের করিডোর চিহ্নিত করা এবং বনাঞ্চল সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘হাতি সংরক্ষণের জন্য ওয়াইল্ডলাইফ প্রোটেকশন অ্যাক্ট দিয়ে কাজ হবে না, এটার জন্য অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার অ্যাক্ট লাগবে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব খায়রুল হাসান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এম মনিরুল এইচ খান প্রমুখ।