ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে মাদারীপুরের ভুরঘাটা পর্যন্ত ৪৭ কিলোমিটার অংশ যেন পরিণত হয়েছে ‘মরণ ফাঁদে’। বড় বড় গর্ত, খানাখন্দ আর জমে থাকা পানির কারণে প্রতিদিন যাত্রীদের আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙ্গাব্রিজ, মোস্তফাপুর, রাজৈর, টেকেরহাট, দিকনগর, বরইতলা, বাবনাতলা, ভুরঘাটাসহ একাধিক স্থানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এই সড়কে পথ চলতে গিয়ে যানবাহনগুলোকে গতি কমিয়ে দিতে হচ্ছে। যার ফলে বাড়ছে জ্বালানি খরচ ও যাতায়াতে সময়।
যাত্রী ও পরিবহন খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সড়কটিতে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তু তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মহাসড়কের উন্নয়ন করেনি মাদারীপুর সড়ক বিভাগ। আবার সময়মতো সংস্কারও করা হচ্ছে না। যার ফলে এই সড়কে দুর্ঘটনা লেগেই আছে।
সম্প্রতি বরইতলা এলাকায় বাস খাদে পড়ে একজন নিহত ও ১৫ জন আহত হন।
মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বরিশাল বিভাগের ছয় জেলা ও মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। প্রতিদিন ছোট-বড় প্রায় ২০ হাজার যানবাহন এই মহাসড়কে চলাচল করে।
মাইক্রোবাস চালক রাসেল খন্দকার বলেন, ‘এই সড়ক দিয়ে গাড়ি চালাতে ভয় লাগে। এটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।’
পথচারী সোহেল খান বলেন, ‘মাদারীপুরের অংশে প্রবেশ করলেই আতঙ্ক বাড়ে। কখন যেন দুর্ঘটনা ঘটে। আর যাতায়াতে সময় বেশি লাগার কারণে সঠিক সময়ে গন্তব্যেও পৌঁছতে পারি না।’
সড়কে বড় বড় গর্তের কারণে গাড়ি চালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে জানালেন পিকআপ চালক তামিম মাতুব্বর।
এই পথ দিয়ে চলাচলকারী একটি বাসের চালকের সহকারী হায়দার বলেন, ‘গাড়ি এই পথ পার হওয়ার সময় ভয় লাগে। আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি। এই অবস্থা থেকে শিগগির মুক্তি পেতে চাই।’
সড়কটির বিষয়ে জানতে কথা হয় মাদারীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হাসানের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আপাতত ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে ইট, সুরকি ও বালু দিয়ে মেরামতের চেষ্টা করছি। তবে বর্ষায় এসব নষ্ট হয়ে যায়। সেজন্য টেকসই সংস্কার করতে মন্ত্রণালয়ে অর্থ বরাদ্দের আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে সড়কটি ভালোভাবে মেরামত করা হবে।’
ভবিষ্যতে সড়কটিকে ছয় লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানালেন তিনি।