ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু হয়েছে মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে। তফসিল অনুযায়ী আগামী ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত প্রার্থীরা প্রচারণা চালাতে পারবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তবে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরুর আগেই আচরণবিধি ভঙ্গ করে নির্বাচনী কার্যক্রম চালানোর অভিযোগ উঠেছে একাধিক প্যানেল ও প্রার্থীর বিরুদ্ধে। অভিযোগের তালিকায় রয়েছেন—ছাত্রদলের সহ-সভাপতি (ভিপি) প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান, ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবু সাদিক কায়েম, স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা, ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লাসহ একাধিক প্রার্থী।
ডাকসুর তফসিল অনুযায়ী, ২৬ অগাস্টের আগে প্রচার শুরু করাসহ আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে একাধিক অভিযোগপত্র জমা পড়লেও প্রশাসন কর্তৃক কোনো কার্যত সমাধান পরিলক্ষিত হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
আচরণবিধি লংঘনের বিষয়ে ডাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের সদস্যের সম্মিলিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযুক্তদের বিষয়টি নিয়ে অবগত করা হবে।’

নির্বাচনী আচরণবিধি
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে কোনো প্রার্থী বা পক্ষ স্বপ্রণোদিত হয়ে কোনো ধরনের উপহার সামগ্রী (উপঢৌকন) বিলি-বন্টন, আপ্যায়ন, অর্থ সহযোগিতা কিংবা অনুরূপ কার্যক্রম নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ বলে বিবেচিত হবে।
ছাত্রী হলগুলোতে হলের শিক্ষার্থী ছাড়াও অন্যান্য ছাত্রী হলের আবাসিক ও অনাবাসিক প্রার্থীরা ১০টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন।
ছেলে প্রার্থীরা ছাত্রী হলের হল প্রশাসন কর্তৃক নির্ধারিত অডিটোরিয়াম অথবা অতিথি কক্ষে নিজেদের প্রচারণা কার্যক্রম চালাতে পারবেন।
ডাকসু নির্বাচন আচরণ বিধিমালা ৬ (গ) অনুযায়ী একজন প্রার্থী বা একটি প্যানেলের পক্ষে প্রতিটি হলে একটি প্রজেকশন মিটিং করার বিধান রয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রার্থীদের হল অডিটোরিয়াম ব্যবহার করার পূর্বে তারিখ ও সময় উল্লেখপূর্বক অনুমতি নিতে হবে।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ডাকসুর ৩৮তম নির্বাচন।

বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো
ডাকসু নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী প্রচারনা শুরুর আগেই আবাসিক হলের রিডিংরুমে প্রবেশ করে নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর একটা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এ ঘটনায় আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে কার্যত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য রোববার প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত দাবি জানিয়েছেন কবি জসীম উদ্দীন হলের শিক্ষার্থী শাহ জামাল।
ছাত্র শিবির সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থীপ্রার্থী সাদিক কায়েম এবং সাধারণ সম্পাদক এস এম এসএম ফরহাদ এর নামে কুশল বিনিময়ের নামে আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ উঠেছে।

তবে শিক্ষার্থীদের সাথে কুশল বিনিময়কে আচরণবিধি লঙ্ঘন হিসেবে দেখছেন না প্যানেলের জি এস পদপ্রার্থী এস এম ফরহাদ।
‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী উমামা ফাতেমার নামে তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনী প্রচারণা শুরুর আগে রোকেয়া হলে অবস্থান করার মাধ্যমে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি কোন নির্বাচনী প্রচার বা মিটিং করতে যাইনি। দীর্ঘদিনে মানসিক ধকলের কারণে “মেন্টাল রিলিফের” জন্য বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম।’
তবে, নিয়মবহির্ভূতভাবে হলে প্রবেশ করার কারণে হল প্রশাসনের কাছে ক্ষমা চেয়ে একটি আবেদন করেছেন বলে জানান তিনি।
‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ প্যানেল থেকে ভিপি পদপ্রার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লার বিরুদ্ধে ছবিসহ পোস্টার বিভিন্ন হলের দেয়ালে টাঙানোর অভিযোগ উঠেছে।